পবিত্র রমজান মাসের ছুটি শেষে পুনরায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে এশিয়া খ্যাত ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদরাসা দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী। শাওয়াল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরু থেকেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজারো ইলমপিপাসু শিক্ষার্থী ছুটে এসেছে এ জ্ঞানের কেন্দ্রভূমিতে।
ক্যাম্পাসজুড়ে বইছে ইলমের সুবাতাস, ছাত্রদের আগমন আর ভর্তি কার্যক্রমে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পুরো পরিবেশ। মাদরাসার দীর্ঘদিনের নিরিবিলি পরিবেশ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী, শতবর্ষের ঐতিহ্য এবং দেশ-বিদেশে স্বীকৃত দাওরায়ে হাদিসের সনদের আকর্ষণে প্রতি বছর ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকে তীব্র প্রতিযোগিতা।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এই মাদরাসায় ছাত্রসংখ্যা ছিল প্রায় ৮,০০০ জন। ধারণা করা হয়, প্রতিবছর এখানে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় প্রায় ১৫-২০ হাজার শিক্ষার্থী। তবে নির্দিষ্ট মান অর্জন না করলে কিংবা আসন পূর্ণ হয়ে গেলে অনেকেই ভর্তি হতে পারে না।
মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম আরবি বর্ষপঞ্জি অনুসারে শাওয়াল থেকে শুরু হয়ে শাবান মাস পর্যন্ত চলে। এখানে রয়েছে দরসি নিজামির প্রথম জামাত থেকে দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ পাঠক্রম। পাশাপাশি উচ্চতর গবেষণা ও বিশেষায়িত বিভাগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
ইফতা বিভাগ (ইসলামী আইন ও ফিকহ গবেষণা)
উলূমূল হাদীস বিভাগ
তাফসীর বিভাগ
দাওয়াহ ও আরবি সাহিত্য বিভাগ
বাংলা সাহিত্য বিভাগ
উচ্চতর তাজবীদ ও কিরআত বিভাগ
হিফজুল কুরআন বিভাগ
ফরায়েজ বিভাগ, উর্দু ও ফারসি বিভাগ
বিভিন্ন সংক্ষিপ্ত মেয়াদি শর্ট কোর্স
প্রত্যেক বিভাগেই রয়েছে সীমিত আসন। ফলে যোগ্যতার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়াটাই এখানে একটি অর্জন হিসেবে বিবেচিত।
হাটহাজারী মাদরাসার অন্যতম বৈশিষ্ট্য এর বিশাল ক্যাম্পাস, ধারাবাহিক ইলমি পরিবেশ ও ইসলামী গাম্ভীর্য। রমজানের বিরতির পর ছাত্রদের আগমনে নতুন করে প্রাণ পেয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। দেশ-বিদেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবারও মুখর হয়ে উঠেছে জ্ঞানের এ তীর্থভূমি।
এই বিদ্যাপীঠ থেকে গড়ে ওঠা জ্ঞানসন্ধানীরা ভবিষ্যতে ইসলামি দাওয়াতের ধারক-বাহক হিসেবে সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে দেবে আলো।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

