রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ সভা করেছেন ডিলাররা। লটারির মাধ্যমে হওয়া সর্বশেষ ডিলার নিয়োগ বাতিলের দাবি তাদের।
রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর জুরাইনে ঢাকা মহানগর আঞ্চলিক অফিস এর সামনে এই প্রতিবাদ সভা করেন ডিলাররা।
প্রতিবাদে ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রকৃতপক্ষে এটি কোনো স্বচ্ছ লটারি ছিল না, বরং পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রভাবশালী মহলের ইচ্ছামতো নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগের জন্য লোক দেখানো একটি প্রহসন। এখানে অনেক ডিলারকে বৈষম্যমূলকভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বঞ্চিত ডিলাররা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (IEB) ভবনে লটারি অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী আগে থেকে লিখিত নোটিশ না দিয়ে কেবলমাত্র নির্বাচিত কিছু ডিলারকে মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে ডাকা হয় এবং এই এসএমএস প্রবেশের গেটপাস হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রশ্ন উঠেছে—কেন সব ডিলার সেই বার্তা পাননি? নোটিশ ইস্যু না করে শুধুমাত্র মোবাইল বার্তায় কেন ডাকা হলো? কেন সংবাদপত্র, বিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ বোর্ডে কোনোরূপ প্রচার করা হয়নি?
অনেক ডিলার আবেদনকারীরা এসএমএস পাননি দাবি করে বলেন, যে কারণে লটারিতে উপস্থিত থাকার সুযোগ হারান অনেকেই। অথচ যেসব ডিলারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, কেবল তারাই আমন্ত্রণ পেয়ে লটারিতে অংশ নেন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিজয়ী হন। ভুক্তভোগী ডিলারদের দাবি ওএমএস নীতিমালা ২০২৪ অনুসারে পূর্বের ডিলারদের বাদ দেওয়া যাবে না, যতক্ষণ না তারা দোষী প্রমাণিত হন। এলাকা ভিত্তিক সকল আবেদনকারীর তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং স্বচ্ছভাবে নাম উত্তোলন করতে হবে।
২৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত লটারি অবিলম্বে বাতিল করে পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে বলেন, ঘুষ-বাণিজ্য ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তভাবে ন্যায়ভিত্তিক ডিলার নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। রেশনিং কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব নেওয়া ও তদারকি কার্যক্রম শক্তিশালী করতে হবে। ডিলারদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ওএমএস পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে অনিয়ম যেন না হয়, তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। বাই রোটেশনের মাধ্যমে রোস্টার বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রতিটি ওএমএস বিক্রয় শুরুর আগে ও শেষে কন্ট্রোল রুমকে ভিডিও কলের মাধ্যমে অবহিত করতে হবে। কালোবাজারি প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো ডিলার অনিয়ম করলে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
ডিলাররা জানান, এসব অভিযোগ জানিয়ে তারা একাধিক দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন, মো. কাউসার আহমেদ, তরিকুল ইসলাম সবুজ, শহীদুল হক শহীদ, অমিত হাসান, মো. বাসেত ও আলমগীর হোসেন সহ অন্যান্য বঞ্চিত ডিলারগন।
একুশে সংবাদ/রাফি/বাবু/ এ.জে