আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়ে সকলের অংশ গ্রহণে ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন (২০২৫-২০২৮) অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ ৪০ বছর পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, জানিয়েছেন প্রার্থী
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পুরান ঢাকার ছুরি টোলা স্কুল প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে। ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ২৬৪ জন। নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, মোট ২৫টি পদে নির্বাচন হলেও এর মধ্যে ১৬ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইতোমধ্যেই নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ৯টি পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে সভাপতি পদে আউয়াল হোসেন ও মো. সাইফুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সভাপতি পদে মো. আনোয়ার হোসেন ও আব্দুর রশিদ ভূঞা, সহ-সভাপতি পদে লড়ছেন মো. বিপ্লবউল হক বিপ্লব, মোহাম্মদ সিরাজ, মো. জসিম, মো. আলী জিন্নাহ ও মো. কামাল, সাধারণ সম্পাদক পদে মো. আবুল কাসেম ও মো. সোহেল হাওলাদার, যুগ্ম সম্পাদক পদে প্রার্থী মো. কালাম ও মো. জসিম মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোহাম্মদ নাসির ও আশরাফ উদ্দিন আহাম্মেদ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে একাধিক প্রার্থী একুশে সংবাদকে বলেন, দেশের পরিবহন শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরেই নানা বঞ্চনার শিকার। সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই, রাস্তায় বিশ্রামের জন্য নেই উপযুক্ত ব্যবস্থা। বিশেষ করে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে গিয়ে বিআরটিএতে প্রচুর হয়রানির শিকার হন তারা। আগামীতে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলা গেলে এসব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
ভোটাররাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভোটগ্রহণের পরিবেশ নিয়ে। সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানান তারা। একাধিক ভোটার বলেন, প্রার্থীরা একে অন্যের পরিবারের মতো। তাই নির্বাচনে যে-ই জয়ী হোক না কেন, সমিতির উন্নয়নেই কাজ করবে। সমিতির সকল সদস্যদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকবে এটাই আমাদের কাম্য।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহিম বক্স দুদু বলেন, “সকাল থেকে অত্যন্ত উৎসব আমেজের মধ্য দিয়েই ভোট গ্রহণ চলছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই এবং কেউ তা করছে না। এছাড়া যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক মাঠে উপস্থিত রয়েছেন।
সংগঠনটির সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল প্রায় চার দশক আগে। এরপর থেকে বারবার কমিটি গঠনে নানা জটিলতা ও প্রভাবশালী মহলের প্রভাবের কারণে নিয়মিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে নতুন প্রজন্মের শ্রমিকরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে থেকেছেন দীর্ঘদিন। এবার এত বছর পর নির্বাচন হওয়ায় সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
নির্বাচন শেষে গণনা সম্পন্ন হলে রাতে ফলাফল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে শ্রমিক ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন করে সংগঠন সচল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী বা ভোটারদের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ নেই।
একুশে সংবাদ/রাফি/বাবু