ভোলা-৩ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, বিবিএস ও নাহী গ্রুপের চেয়্যারম্যান ইন্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার (সিআইপি) বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে একটি রাষ্ট্র দিয়েছেন, একটি জাতি হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি আমাদের বিশ্ব দরবারে আত্মপরিচয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি তার নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের শোষিৃত ও বঞ্চিত মানুষের জন্য। তিনি চেয়েছিলেন তাদের ভাগ্য তিনি পরিবর্তন করবেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন। দেশের মানুষের উন্নত জীবনের লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দেন।
রোববার (২৬ মার্চ) রাজধানীর বনানীর ঢাকাস্থ লালমোহন বাসীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মহান স্বাধীনতা দিবস এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘ঢাকাস্থ লালমোহন বাসী’র উদ্যোগে “বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা” শীর্ষক আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহাফিলের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ সমার্থক। বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের সাথে তার নাম একাকার হয়েছে। এ তো শুধু একটি নাম নয়, বাঙালির জাতীয় মুক্তির ইতিহাস। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার নিভৃত পল্লীতে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে দিন মাতৃক্রোড়ে যে শিশু প্রথম চোখ মেলেছিল, পরবর্তীকালে সে শিশুর পরিচিতি দেশের সীমানা পেরিয়ে পরিব্যাপ্ত হয়েছে বিশ্বব্যাপী। মা-বাবার আদরের ‘খোকা’, রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের সুপ্রিয় ‘মুজিব ভাই’, সমসাময়িকদের প্রিয় ‘শেখ সাহেব’ থেকে মুক্তিকামী বাঙালির ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে অর্জন করেন ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি, শেষত কায়েমী স্বার্থবাদীদের প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে হয়ে ওঠেন জাতির অবিসংবাদিত নেতা-‘জাতির পিতা’, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।’
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু জীবনব্যাপী একটিই সাধনা করেছেন, বাঙালির মুক্তির জন্য নিজকে উৎসর্গ করা। ধাপে ধাপে প্রতিটি সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিজের জীবনের প্রায় ১৪টি বছর পার করেছেন কারাগারের কুটিরে শুধুমাত্র বাঙালির মুক্তির জন্য। ১৯৪৮ থেকে `৫২ অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য আন্দোলন, `৫০ থেকে `৫৪ জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ, `৫৪ থেকে `৫৬ সাংবিধানিক স্বায়ত্তশাসন, `৬৪তে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িকতা, `৬৬তে জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার অর্থাৎ স্বাধিকার তথা ৬ দফা, `৬৯-এর গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে মৃত্যুকূপ থেকে মুক্তমানব হয়ে বেরিয়ে এসে সর্বজনীন ভোটাধিকারের দাবি এবং সংখ্যাগুরুর অধিকার আদায়, `৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ভূমিধ্বস বিজয় অর্জন ও পরিশেষে `৭১-এ স্বাধীনতার ডাক দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
আবু নোমান বলেন, আমরা বাঙালি এতটায় নিকৃষ্ঠ, যে মানুষটি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিল সেই মানুষটিকে খুন করেছি নৃশংসভাবে। ৭১ পরবর্তীতে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার আগেই সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে পরিবারসহ খুন করা হয় সর্বশ্রেষ্ঠ এ বাঙালিকে। এরপর নানা প্রতিকূলতা মুকাবিলা করে আওয়ামী লীগ ও জাতির পিতার স্বপ্নকে পূর্ণতা দিতে হাল ধরেন তার সুযোগ্য তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর ফের ষড়যন্ত্রের শিকার হন তিনি। পরবর্তী নির্বাচনে শেখ হাসিনা সরকারকে যড়যন্ত করে হারিয়ে ক্ষমতা দখল করে যড়যন্তকারীরা। এর দীর্ঘদিন পর ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচন বড় জয়ে ফের সরকার গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দেশ এগিয়ে চলছে উন্নয়নের মহাসড়কে।

সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ব্যবসা ও উন্নয়নবান্ধব সরকার। ব্যবসা-বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। মানুষের মাথাপিছু আয়, উৎপাদন, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। দেশের শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সবখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অথর্নীতি আজ চাঙ্গা হয়েছে। তলাবিহীন ঝুঁড়ি হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিত বাংলাদেশ আজ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে আজ মডেল ইকোনমিক কান্ট্রি।
ইন্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব অর্থে পদ্মার ওপর ৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নিমার্ণ করার সাহস দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক অথার্য়ন থেকে সরে যাওয়ার পর বিশাল এ প্রকল্প হাতে নেয়ার ঘটনা অনেক দেশ ও সংস্থার সন্দেহ ও বিস্ময় প্রকাশ করলেও সে স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান। ২০৪১ সালে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগও চলমান। রয়েছে মহাকাশ জয়ের লক্ষ্য। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেসসহ আরো কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।
দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সকল দেশ বিরোধী যড়যন্ত্র প্রতিরোধ করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।
এ সময় স্থানীয় বক্তারা বলেন, সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোলা-৩ লালমোহন তজুমদ্দিন থেকে ইন্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার (সিআইপি) কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দিলে ভোলা-৩ মাদক, সন্ত্রাস, দূর্নীতিমুক্ত হবে। সেই সাথে সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটবে। ফিরে আসবে দলীয় শান্তি শৃঙ্খলা, মূল্যায়ন হবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।
আলোচনা সভায় ভোলা-৩ লালমোহন তজুমদ্দিনের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি সহ আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/আজ/এপি