AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ছাত্রী মেসের ঘটনা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মারামারি


ছাত্রী মেসের ঘটনা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মারামারি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পার্শ্ববর্তী একটি ছাত্রী হোস্টেলে এক ছাত্রীর চার মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল চাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেস ম্যানেজার ও স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা সাতটার দিকে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী পদমদি-ত্রিবেণী রোডের পাশের নুর জাহান মহিলা হোস্টেলে এ ঘটনা ঘটে।

মেস ম্যানেজারের সঙ্গে হাতাহাতির একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এতে উভয়পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ল‘ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফারিয়া খাতুনের মেসে বিগত চারমাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল। এতে মেস ম্যানেজার বিবেক বিশ্বাস তাকে বিল পরিশোধের জন্য বললেও সে বিল পরিশোধ করেনি। পরে বিকালে ফারিয়ার কাছে আবারো মেস ম্যানেজার বিদ্যুৎ বিল চাইলে উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে সে (ফারিয়া খাতুন) বিষয়টি সমাধানে তার ছেলে বন্ধু আবু হানিফ পিয়াসকে (একই বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী) জানায় ৷ সন্ধ্যায় পিয়াস তার আরও ১০/১২ জন বন্ধুকে নিয়ে এ বিষয়ে মেস ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে যান৷ এসময় মেয়েদের মেসে ছেলেদের ডেকে নিয়ে আসায় ওই ছাত্রীর (ফারিয়া খাতুন) উপর ক্ষিপ্ত হন মেস ম্যানেজার বিবেক বিশ্বাস।

একপর্যায়ে মেসের ম্যানেজার ও কেয়ারটেকার ইসলাম জোয়াদ্দার ছেলে শিক্ষার্থীদের মেস থেকে জোর করে বের করে দেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির সূত্রপাত ঘটে৷ পরে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব আলী, ল‘ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আবু হানিফ পিয়াস, ইনফরমেশন কমিউনিকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের নাঈম রেজা, ইংরেজি বিভাগের হৃদয় আবির ও স্থানীয় আশিক খানসহ সাতজন আহত হন।

পরে রাত দশটার দিকে শৈলকূপা থানাধীন রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে দুইজন পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় মাতাব্বরকে সাথে নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে সমোঝোতা করে দেন।

ফারিয়া খাতুন বলেন, আমি আজ সন্ধ্যায় ম্যানেজারকে বিদ্যুৎ বিল দিতে গেলে তিনি আমাকে বাজে ইঙ্গিত দেন। টাকা নেওয়ার সময় ম্যানেজার আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করেন। পরে আমি টাকাটা ছুড়ে দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাসার নাম্বার চান এবং বলেন, বেয়াদব মেয়ে। তুমি মেস ছেড়ে চলে যাও।

পরে আমি আমার বিভাগের বন্ধুকে (আবু হানিফ পিয়াস) বিষয়টি জানালে সে আমার বিষয়ে মেস ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে আসলে ম্যানেজার ও নিরাপত্তাকর্মী তার বাজে আচরণ করে। পরে সে তার কিছু বন্ধুদের নিয়ে আবারও ম্যানেজারের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে ম্যানেজার তাকে (আবু হানিফ পিয়াস) জামার কলার ধরে বের করে দেয়। তখন উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

তিনি আরও বলেন, সমোঝোতার সময় স্থানীয় মাতব্বররা আমাকে কোনো কথা বলার সুযোগ দেইনি। উল্টো তারা আমার চরিত্র নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাজে মন্তব্য করেছে। আমি তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামাল দিতে চাপে পড়ে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত আবেদন করবো।

নুর জাহান মহিলা হোস্টেলের ম্যানেজার বিবেক বিশ্বাস বলেন, গত জানুয়ারি মাসে ওই মেয়ে মেসে উঠে। এরপর সে এতদিন থেকেছে কিন্তু কোন বিদ্যুৎ বিল দেয়নি। তার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া প্রায় এক হাজার টাকা। আমি কয়েকবার বিল চাইতে গেলে সে বিভিন্নরকম বাহানা দিতে থাকে। সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। আমি তার সঙ্গে কোন বাজে আচরণ করিনি।

স্থানীয় মাতব্বর রেজাউল করিম খান বলেন, মেসের মধ্যে কোন ঝামেলা হলে মেস ম্যানেজারকে জানাতে হতো। আর মেস মেনেজারের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে সেটা মেসের মালিককে জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হতো। কিন্তু ওই মেয়েটা সেটা না করে তার বন্ধুদের ডেকে নিয়ে এসে একটা হুলুস্থুল কাণ্ড বাঁধিয়েছে, যেটা ঠিক হয়নি।

আবু হানিফ পিয়াস বলেন, আমাদের বান্ধবীর সাথে কিছুদিন ধরে মেস ম্যানেজার বাজে ব্যবহার করে আসছিলো। বিভিন্ন সময় মেস ম্যানেজার তাকে বাজে ইঙ্গিত প্রদান করে বলে আমাদের জানায়। এছাড়াও মেসের অন্যান্য মেয়েদের সাথেও প্রায় সময়ই খারাপ আচরণ করে। আজকেও আমার বান্ধবীর সাথে খারাপ আচরণ করলে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করতে যাই। তখন তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিবেক আমার এক বন্ধুকে চড় মারে। পরে আমরা উত্তেজিত হয়ে পড়ি। এসময় স্থানীয় লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে আমাদের ওপর চড়াও হয়। এতে আমরা চার বন্ধু আহত হই। পরে আমরা সেখান থেকে চলে আসি।

রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির এস আই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি মিটমাট করেছি। এখানে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো আমরা সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছি। যদি কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

 

একুশে সংবাদ/ইবি/সা.আ

Link copied!