ইউরোপে অবৈধ অভিবাসনের সামগ্রিক হার কমলেও, মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় পথ ব্যবহার করে ইউরোপে প্রবেশে বাংলাদেশিরা শীর্ষে থেকে গেছে। ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রনটেক্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন ৫০ হাজার ৮৫০ জন বাংলাদেশি, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।
ফ্রনটেক্স শুক্রবার (১০ অক্টোবর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর মাসেই মধ্য ভূমধ্যসাগর রুট ব্যবহার করে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন ৮ হাজার ৪৬ জন।
প্রতিবেদনের প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ জন অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। সংস্থার মতে, কঠোর নজরদারি ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জোরদার হওয়ার কারণে সামগ্রিকভাবে অবৈধ অনুপ্রবেশ কমেছে।
ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশকারী শীর্ষ তিন দেশের নাগরিক হলেন: বাংলাদেশি, মিসরীয় ও আফগান। বিশেষভাবে, মধ্য ভূমধ্যসাগর রুট ইউরোপে অনিয়মিত প্রবেশের প্রধান পথ হিসেবে চিহ্নিত। এই রুট দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছে মোট অবৈধ প্রবেশকারীর প্রায় ৪০ শতাংশ।
ফ্রনটেক্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, অন্যান্য রুটে অনিয়মিত প্রবেশের হার হ্রাস পেয়েছে—পশ্চিম আফ্রিকান রুট ৫৮ শতাংশ, পশ্চিম বলকান রুট ৪৭ শতাংশ, পূর্ব ইউরোপের স্থলসীমান্ত ৩৬ শতাংশ এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগর রুট ২২ শতাংশ। তবে পশ্চিম ভূমধ্যসাগর রুটে অনিয়মিত প্রবেশ বেড়েছে ২৮ শতাংশ, যার মূলত আলজেরিয়া থেকে আসা অভিবাসীরা।
এদিকে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, অবৈধ পথে ইউরোপে প্রবেশ কমলেও মানবিক সংকট এখনো গভীর। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পার হওয়ার সময় কমপক্ষে ১ হাজার ২৯৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফ্রান্স হয়ে ইংলিশ চ্যানেল রুটে যুক্তরাজ্যের দিকে অবৈধ প্রবেশের চেষ্টা ১৪ শতাংশ বেড়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৩০০ জন ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি ও আফ্রিকার কিছু দেশের কঠোর নিয়ন্ত্রণের কারণে পাচারকারীরা নতুন কৌশল নিচ্ছে, যা অভিবাসীদের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে