মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনি দেশ কুয়েত। দির্ঘ দিন থেকে দেশটিতে ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে বিভিন্ন জটিলতা থাকলেও এখন থেকে তা সহজিকরণ করে দিয়েছে দেশটির সরকার(৪আগষ্ট )সোমবার আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, নতুন নিয়ম অনুযায়ী-এখন থেকে পারিবারিক ভিজিট ভিসার প্রাথমিক মেয়াদ ৩ মাস, যা ৬ মাস কিংবা ১ বছরের জন্যও বাড়ানো যেতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কুয়েত সরকার একদিকে যেমন দেশটিকে আরও পর্যটক ও বিনিয়োগবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, অন্যদিকে প্রবাসীদের জন্যও খুলে দিচ্ছে স্বস্তির এক নতুন দিগন্তের অপার সম্ভাবনার দুয়ার।
কুয়েতের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ ফাহাদ ইউসুফ সৌদ আল-সাবাহ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কুয়েত ভিসা প্ল্যাটফর্মে বিদ্যমান জটিলতা ও নাগরিক-প্রবাসীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে এই নতুন নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা উদার মনে জনগণের মন্তব্য গ্রহণ করছি, কারণ আমাদের লক্ষ্য কুয়েতকে আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা। আমরা পরিপূর্ণতার দাবি করি না, কিন্তু উন্নতির জন্য বদ্ধপরিকর।
আরব টাইমস বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির পূর্বশর্ত যা এতদিন ভিজিট ভিসার জন্য আবশ্যক ছিল, সেটিও বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি আত্মীয়তার ক্ষেত্রে শিথিলতা এনে চতুর্থ ডিগ্রী পর্যন্ত আত্মীয়দের জন্য ভিসা পাওয়ার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। এতে অভিবাসীদের জন্য পরিবার-পরিজনদের কুয়েত ভ্রমণের পথ আগের চেয়ে অনেক সহজ হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন ভিসা নীতিতে আরও একটি বড় পরিবর্তন এসেছে বিমান যাত্রার ক্ষেত্রে। এতদিন পারিবারিক ভিজিট ভিসাধারীদের কেবল কুয়েতি এয়ারলাইন্সেই যাতায়াত করতে হতো। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইন্সসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাও এই যাত্রীদের বহন করতে পারবে।
এতে যাত্রীরা যেমন বিকল্প সুবিধা পাবেন, তেমনি টিকিটের দামও তুলনামূলকভাবে প্রতিযোগিতামূলক থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শেখ ফাহাদ আরও বলেন, আমরা বড় ধরনের একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করছি। কুয়েতকে আন্তর্জাতিক পর্যটন ও বাণিজ্যের একটি কেন্দ্রে পরিণত করাই আমাদের লক্ষ্য। ভিসা সংক্রান্ত ফি নির্ধারণের বিষয়টি এখন মন্ত্রিসভার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। একই সঙ্গে, নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণদের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন মন্ত্রী।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, যারা দেশের বাণিজ্যিক কার্যকলাপে মূল্য যোগ করে না কিংবা নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করতে পারেন না, কেবল তাদের জন্য কুয়েতের দরজা খোলা নয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভিসা নিয়ে এই সিদ্ধান্ত কুয়েতবাসী ও প্রবাসীদের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সহজতর ও নমনীয় ভিসা নীতির মাধ্যমে কুয়েত শুধু পরিবার পুনর্মিলনের সুযোগ বাড়াচ্ছে না, বরং নিজেদের অর্থনীতিকেও উন্মুক্ত করছে বিশ্বের কাছে। পর্যটন ও বাণিজ্যে আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে কুয়েতের ভাবমূর্তি আরও মজবুত হবে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
কুয়েতে বসবাসরত বাংলাদেশীরা জানান ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে কুয়েত সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে তারা সাধুবাদ জানান তারা বলেন এখন থেকে ফ্যামিলি ভিসা পেতে তেমন একটা ঝামেলায় পোহাতে হবে না।সেই সাথে ভিসার সময়সীমা বৃদ্ধি করাতে বাড়তি চিন্তায় ও পড়তে হবেনা।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে