ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের উত্তর আলমনগর গ্রামের মোল্যা বাড়ী জামে মসজিদের ঈমাম মোজাম্মেল হক (২২) মক্তবে পড়ুয়া এক কন্যা শিশু (৮) কে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিশুটি উক্ত মসজিদের পাশে এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় উক্ত মসজিদের ভিতরেই ধর্ষনের ঘটনাটি ঘটে। আর এলাকাবাসী ঘটনাটি গোপন রাখার পর পুলিশকে জানিয়েছে দিবাগত রাত ১০ টায়। পুলিশ ওই রাতেই শিশুর পরহিত কাপড় চোপড় জব্দ করে শুক্রবার দুপুরে শিশুটির ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
এ ধর্ষন ঘটনার পর ন্যায় বিচার চেয়ে শিশুটির মা (লাকী বেগম) বাদী হয়ে চরভদ্রাসন থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলা নং-০৩, তাং-০৫/১২/২০২৫খ্রি.।
উক্ত ঈমাম উপজেলার জামিয়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলুম মাদ্রাসায় মাওলানা বিভাগের শিক্ষার্থী। সে মসজিদের পাশে এক বাড়ীতে লজিং থেকে মাদ্রাসায় পড়াশুনার পাশাপাশি ঈমামতি করে আসছিল। উক্ত ঈমামের পৈত্রিক বসতি হলো- নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আঃ হাই এর ছেলে মোজাম্মেল হক (২২)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন ভোরে ফজরের নামাজের পর প্রতিদিনের মত ওই ঈমাম এলাকার শিশুদের আরবী শেখানোর জন্য মসজিদের বারান্দায় বসে মক্তব ক্লাশ নিচ্ছিল। এ সময় ঈমাম ওই শিশুকে বলে যে, পড়াশেষে সবাই চলে গেলেও তুমি বাড়ীতে যাইয়ো না। আমি তোমাকে আলাদাভাবে পড়াবো। প্রায় এক ঘন্টাকাল মক্তব ক্লাশ নেওয়ার পর ঈমাম সব শিশুদের ছুটি দিয়ে বাড়ীতে পাঠায়। কিন্তু উক্ত শিশুকে সুকৌশলে মসজিদের ভিতরে নিয়ে লম্পট ঈমাম দরজা জানালা বন্ধ করে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে পরনের কাপড় চোপড় খুলে ফ্লোলের ভিতরে শুইয়ে শিশুটিকে ধর্ষন করে বলে অভিযোগ।
এ সময় শিশুটি চিৎকার করতে থাকলে পাষন্ড ঈমাম শিশুটিকে টাকার লোভ দেখিয়ে ঘটনা কাউকে বলতে নিষেধ করে। পরে শিশুটি অসুস্থ্য অবস্থায় বাড়ীতে এসে তার মাকে ঘটনা খুলে বলে এবং ধর্ষনের আলামতগুলো তার মাকে দেখায়। শিশুটির মা এলাকার গন্যমান্যদের জানালে তারা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চায়। তাই পরে শিশুটির মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
এ ব্যপারে চরভদ্রাসন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রজিউল্লাহ খান বলেন, “পাষন্ড ঈমাম শিশুটি গুপ্তাঙ্গে ভ্যাসলিন মাখিয়ে ধর্ষন করছে। বিষয়টি যেহেতু সিনসেটিভ তাই ওই রাতেই ধর্ষনের আলামত সংগ্রহ করে শিশুটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য মডিকেলে পাঠানো হয়েছে”। আর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, “ ধর্ষক ঈমামকে গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সে পলাকত রয়েছে, এখানো খুঁজে পাওয়া যায় নাই”।
খোজ নিয়ে জানা যায়, এ ঘটনার পর এলাকাবাসী দুভাগে বিভক্ত হয়ে একদল ধর্ষক ঈমামকে বাঁচাতে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। আরেক পক্ষ গণধোলাই দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়। পরে উক্ত মসজিদ কমিটি ধর্ষক ঈমাম যে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছিল সে মাদ্রাসা শিক্ষকদের ডেকে নিয়ে ধর্ষককে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার পর সে উধাও রয়েছে বলে জানা যায়। আর উক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ ইব্রাহিম মোল্যা জানান, “ ঘটনার পর মসজিদ ঈমামকে চাকুরী চ্যুতি করা হয়েছে এবং আমরাও এ ঘটনার ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি”।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

