দীর্ঘ সাত বছরের বেশি সময় ধরে চলমান রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিরসনে মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী ভূমিকা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে থেকে মালয়েশিয়া এই সংকট সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা বারনামাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “আসিয়ানের সভাপতির দায়িত্বে থেকে এবং রোহিঙ্গা আশ্রয়দানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মালয়েশিয়া আঞ্চলিকভাবে বড় অবদান রাখতে সক্ষম। আমরা আশা করি, তারা পুরো প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে তাদের প্রভাব ব্যবহার করবে।”
ড. ইউনূস সতর্ক করে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি ও সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এর কারণে নতুন করে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে বাংলাদেশে আসার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। কেবল গত দেড় বছরে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এর সঙ্গে আগে থেকেই থাকা প্রায় ১২ লাখ শরণার্থী যুক্ত হয়ে পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করেছে।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ তহবিল পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে।
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আগামী কয়েক মাসে তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানান প্রধান উপদেষ্টা। এর মধ্যে—আগস্টের শেষ দিকে কক্সবাজারে আট বছর পূর্তিতে একটি সম্মেলন,সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের সময় নিউইয়র্কে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, এবং বছরের শেষে দোহায় আরেকটি আন্তর্জাতিক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনা অভিযানের পর রাখাইন থেকে লাখো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। বর্তমানে এ সংকট শুধু বাংলাদেশকেই নয়, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়াকেও প্রভাবিত করছে। যদিও মালয়েশিয়া জাতিসংঘের শরণার্থী সনদে স্বাক্ষরকারী নয়, তবুও মানবিক বিবেচনায় দেশটিতে দেড় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে