মাত্র ১২ বছরের শিশু ঝুমঝুম খাতুন। কিছুদিন আগেও স্কুলে যাওয়া-ফেরার পথে মায়ের হাত শক্ত করে ধরে রাখত সে। কিন্তু সেই মায়ের আর ফিরে আসা হলো না। মেয়ের চোখের সামনে আগুনে পুড়ে শেষবারের মতো পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন উম্মে হাবিবা রজনী। মেয়ের কান্না যেন থামছেই না।
গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন রজনী। সেদিন মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মা ও মেয়ে। বিমান বিধ্বস্তের পর আগুনের শিকার হন দুজনেই। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সিএমএইচ বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় উম্মে হাবিবার।
রজনীর স্বামী জোহরুল ইসলাম ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। পরিবারসহ উত্তরা এলাকায় থাকতেন। তাদের একমাত্র সন্তান ঝুমঝুম (১২) মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতো মেয়েকে আনতে গিয়েছিলেন রজনী। এ সময় মাইলস্টোন স্কুলের সামনে তাদের সামনেই বিধ্বস্ত হয় প্রশিক্ষণ বিমানটি। দুর্ঘটনায় মা-মেয়ে দুজনই আগুনে দগ্ধ হন।
রজনীর মরদেহ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোরে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের বাওট গ্রামে পৌঁছালে পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হয় দৌলতপুর উপজেলার সাজিপুর গ্রামে, যেখানে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
অন্যদিকে মেয়ে ঝুমঝুম খাতুন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরিবারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭৮ জন।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে