AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

রাঙ্গাবালী: বাংলাদেশের দুঃখ দুর্দশার জীবন্ত প্রমাণচিত্র



রাঙ্গাবালী: বাংলাদেশের দুঃখ দুর্দশার জীবন্ত প্রমাণচিত্র

বঙ্গোপসাগরের কোলে জেগে ওঠা চর ও দ্বীপ নিয়ে গঠিত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা যেন বাংলাদেশের বাস্তবতা ও বৈষম্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কথিত আছে, সাগরের বুকে নতুন বালুচরের সৃষ্টি থেকে জন্ম নেয় এই জনপদ, যা স্থানীয়ভাবে "রাঙ্গা" বালু নামেই পরিচিত।

৪৭০.১২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপ উপজেলা পটুয়াখালী জেলা কিংবা দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ছয়টি ইউনিয়ন নিয়েই গঠিত রাঙ্গাবালী; প্রতিটি ইউনিয়ন একেকটি দ্বীপ, কোথাও কোথাও আবার একটি ইউনিয়নের মধ্যেই রয়েছে একাধিক চর।

সংযোগহীন এক উপজেলা

এই দ্বীপাঞ্চলের এক ইউনিয়নের সঙ্গে অন্য ইউনিয়নের নেই কোনো সড়ক যোগাযোগ। ভরসা শুধুই নৌপথ, তাও সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বৈরী আবহাওয়ায় বা জোয়ারের সময়, যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

বিদ্যুৎ ছিল শুধুই স্বপ্ন

২০২২ সালের আগে পুরো রাঙ্গাবালী ছিল বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন—a পুরো উপজেলা হ্যারিকেন ও সৌরবিদ্যুৎ নির্ভর ছিল। পাশেই পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলেও, রাঙ্গাবালীর ঘরে ঘরে আলো জ্বলেনি। বর্তমানে বিদ্যুৎ এলেও তা নিরবচ্ছিন্ন নয়—সাধারণ বৃষ্টি বা ঝড়েই বিদ্যুৎ চলে যায়, আর ফিরে আসতে সময় লাগে ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা। বিদ্যুৎ অফিসও জানাতে পারে না কেন সংযোগ নেই।

চিকিৎসা ও শিক্ষা—আছে শুধু নামমাত্র

দুই লক্ষাধিক মানুষের এই উপজেলায় নেই একটি পূর্ণাঙ্গ সরকারি হাসপাতালও। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে শহরে পৌঁছাতে হয় টলার বা নৌকায়, যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
শিক্ষা ব্যবস্থাও রয়েছে সীমাবদ্ধতায়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কিছু প্রতিষ্ঠান থাকলেও উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই বললেই চলে। ফলে শিক্ষার্থীদের বাইরে গিয়ে পড়তে হয়, যা অনেকের সাধ্যের বাইরে।

দুর্যোগে অসহায় রাঙ্গাবালী

টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় বর্ষা বা জোয়ারের সময় অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের অভাব আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম দেয়। সড়ক ব্যবস্থার দুরবস্থা এমন যে, বর্ষা মৌসুমে অনেক রাস্তা চাষাবাদের জমিতে পরিণত হয়।

রাঙ্গাবালীবাসীর প্রাণের দাবি

  •  টেকসই ও উন্নতমানের বেড়িবাঁধ নির্মাণ

  •  সরকারি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন

  •  নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ

  •  ফেরি সার্ভিস ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা

  •  দ্বীপ ইউনিয়নগুলোর মধ্যে ব্রিজ নির্মাণ

  •  উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিতকরণ

  •  আধুনিক ও নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ

স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও যখন দেশের এক প্রান্ত এমন পশ্চাদপদ অবস্থায় রয়েছে, তখন প্রশ্ন ওঠে—‍‍`উন্নয়ন‍‍` কি সত্যিই সবার জন্য সমান? সময় এসেছে, শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে রাঙ্গাবালীকে বসবাসযোগ্য ও মর্যাদাপূর্ণ একটি উপকূলীয় জনপদে রূপান্তরের।

 

একুশে সংবাদ/প.প্র/এ.জে

Link copied!