কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ইউনিসেফ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন পরিচালিত ছয় হাজার ৪৯৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে ইউনিসেফ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন এই সিদ্ধান্ত জানায়।
চিঠিতে বলা হয়, ক্যাম্পে উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং চলমান অস্থিরতার প্রেক্ষিতে সব শিক্ষা কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকবে। এর ফলে দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু শিক্ষার্থীর পড়াশোনা থমকে গেল।
এর আগে গত ২ জুন ইউনিসেফ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানায়, তহবিল সংকটের কারণে এ শিক্ষা কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এরই মধ্যে ইউনিসেফ পরিচালিত এক হাজার ২০০ স্থানীয় শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। শিক্ষকদের ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে আজ সকালে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে অবরোধ করেন, ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্যাপক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকদের বহাল রেখে স্থানীয় এক হাজার ২৫০ জন বাংলাদেশি শিক্ষককে একযোগে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এনজিও সংস্থা ব্র্যাক, কোডেক, ফ্রেন্ডশিপ, মুক্তি কক্সবাজার, জেসিএফসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নেয়, যা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন বলেন, “চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছি। শিক্ষকদের চাকরি পুনর্বহাল এবং পর্যাপ্ত তহবিল প্রদানের জন্য আমরা জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছি।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়ায় এর প্রভাব ক্যাম্পের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপরও পড়তে পারে। একইসঙ্গে স্থানীয় শিক্ষকদের ব্যাপক ছাঁটাই রোহিঙ্গা সংকটকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
একুশে সংবাদ / এন.ট/এ.জে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
