রাজধানীতে অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে আগারগাঁও ও মিরপুর-১০ নম্বরে লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন অটোরিকশা চালকরা। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, মোটরযানে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। তবে ভোগান্তিতে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে মেট্রোরেল। যাত্রীরা বাস থেকে নেমে মেট্রোতে যাচ্ছেন কাজীপাড়া, আগারগাঁও ও মতিঝিলের দিকে।
রোববার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে অবস্থান নেন।
সরেজমিন দেখা যায়, কাছের গন্তব্যের যাত্রীরা বাস থেকে নেমে রিকশা বা হেঁটে চলে যাচ্ছেন গন্তব্যে। তবে যারা আগারগাঁও, ফার্মগেট, মতিঝিল যাবেন তারা যাচ্ছেন মেট্রো স্টেশনে। এতে মিরপুর-১০ নম্বর মেট্রো স্টেশনে ব্যাপক ভিড় লক্ষ করা যায়। স্টেশনের টিকিট কাউন্টারেও দেখা যায় যাত্রীদের লম্বা লাইন। এমনকি ট্রেনে উঠতেও ঠেলাঠেলি করে উঠতে হচ্ছে। তবুও বেশ স্বস্তি বোধ করছেন যাত্রীরা।
এ বিষয়ে কথা হয় বেসরকারি চাকরীজীবী আরাফাত আলীর সঙ্গে। তিনি যাবেন পল্টন। মিরপুর-১২ থেকে বাসে উঠে ১০ নম্বরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভের কারণে নেমে পড়েন। এরপর টিকিট কেটে মেট্রো স্টেশনে অপেক্ষায় ট্রেনের জন্য।
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় গ্যাঞ্জাম দেখে টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম। কীভাবে যাব যখন ভাবছিলাম তখনই মনে হলো মেট্রোর কথা। আধা ঘণ্টা ধরে মেট্রোর টিকিট কাটলেও গন্তব্যে দ্রুত যেতে পারব এটা ভেবেই ভালো লাগছে।’
কথা হয় আরেক যাত্রী হাসান সরকারের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভের কারণে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তাতে মনে হয় না সহজে থামবে। তাই বাসে বসে না থেকে মেট্রোতে উঠেছি। মাল ডেলিভারি দিতে দুপুরের মধ্যে কারওয়ান বাজার যেতে হবে।’
এদিকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ তুলে না নেয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন চালকরা। এসময় তারা সড়ক অবরোধ করে বাস ভাঙচুর করে।
ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান এবং রং চটা, জরাজীর্ণ, লক্কড়-ঝক্কড় মোটরযান চালানো বন্ধ করা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। বিআরটিএ জানায়, ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি-হুইলার ঢাকা মহানগরীতে চলাচলের কারণে সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ অনুযায়ী ব্যাটারি/মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি-হুইলার এবং ফিটনেসের অনুপযোগী, রংচটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়-ঝক্কড় মোটরযান চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ অবস্থায় ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারি/মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি- হুইলার এবং ফিটনেস এর অনুপযোগী, রং চটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়-ঝক্কড় মোটরযান চলাচল বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। অন্যথায়, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা