ভারি বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসের তীব্রতায় এশিয়ার তিন দেশ—ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড—জুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ৭৫০–এর বেশি হয়েছে। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত লাখো মানুষকে উদ্ধারকারীরা প্রতিকূল পরিবেশে ত্রাণসহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের হিসাবে, এখন পর্যন্ত ৯০৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং ৪১০ জন এখনো নিখোঁজ। বন্যায় প্রায় আট লাখ মানুষ গৃহহারা হয়ে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।
আচেহ প্রদেশে আরও ভারি বর্ষণের আশঙ্কা করছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। গভর্নর মুজাকির মানাফ জানিয়েছেন, বহু এলাকায় কোমরসমান কাদা ও পানির মধ্যে এখনও মরদেহ খুঁজে বের করতে হচ্ছে। অনেকে সরাসরি বন্যায় না মরলেও খাদ্যের সংকট এখন বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শ্রীলঙ্কা সরকার নিশ্চিত করেছে, দেশটিতে ৬০৭ জন মারা গেছেন, আর ২১৪ জন নিখোঁজ। প্রেসিডেন্ট আনুরা কুমারা দিসানায়েকে এই দুর্যোগকে দেশের “সবচেয়ে কঠিন প্রাকৃতিক সঙ্কট” বলে উল্লেখ করেছেন।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, ঝড় ও ভূমিধসে ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ৭১ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, যার মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করেছে, অব্যাহত বৃষ্টিতে আরও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ছে, যা উদ্ধারকাজকে ব্যাহত করছে।
থাইল্যান্ড ও প্রতিবেশী দেশগুলো
থাইল্যান্ডে বন্যা ও দুর্যোগে কমপক্ষে ২৭৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়ায় নিহতের সংখ্যা দুইজন এবং ভিয়েতনামে ভূমিধসে দুইজন মারা গেছেন বলে সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ অঞ্চলের কয়েকটি গ্রাম পুরোপুরি পানির নিচে ডুবে গেছে। অনেক এলাকা এখনও বাইরের বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগহীন। স্থানীয় প্রশাসনের আশঙ্কা—পর্যাপ্ত খাদ্য না পেলে আরও প্রাণহানি ঘটতে পারে।
মুজাকির মানাফ বলেন, “বন্যায় গ্রামগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অনেক জায়গা এখন কেবল মানচিত্রে নাম হিসেবে আছে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

