গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) থেকে বুধবার (২৭ আগস্ট) পর্যন্ত নতুন করে আরও ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন ছিলেন মানবিক সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা করা সাধারণ মানুষ। এছাড়া অনাহার ও পুষ্টিহীনতায় মৃত্যু হয়েছে আরও তিনজনের। তথ্যটি নিশ্চিত করেছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনারা গাজার কেন্দ্রীয় শহরগুলোতে আরও গভীরে প্রবেশ করেছে। টানা হামলায় মহল্লার পর মহল্লা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, ফলে সাধারণ মানুষ কোথাও আশ্রয় পাচ্ছে না। একই সঙ্গে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাদ্যসংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
মঙ্গলবার পূর্ব গাজা নগরীর এক ব্যস্ত বাজারে বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হন, যাদের মধ্যে দুই নারীও ছিলেন। আল-আহলি আরব হাসপাতাল জানায়, হামলায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
এদিকে আল জাজিরার যাচাইকৃত ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, উত্তর গাজার আস-সাফতাওয়ি অঞ্চল থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রাণ বাঁচাতে দক্ষিণ দিকে যাচ্ছেন। নারী-পুরুষ ও শিশুরা ধুলোমাখা সড়কে লম্বা সারি বেঁধে হাঁটছেন। কারও হাতে ব্যাগ বা খাটিয়া, কেউ ঠেলাগাড়িতে সামান্য জিনিস বহন করছেন। শিশুদের হাত ধরে হাঁটতে দেখা গেছে অনেককে।
প্যালেস্টাইনি সিভিল ডিফেন্সের হিসাবে, ৬ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে জায়তুন ও সাবরা এলাকায় এক হাজারেরও বেশি ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার বাসিন্দা ও লেখক সারা আওয়াদ বলেন, প্রতিদিন পরিবারগুলোকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে— বোমা হামলার মধ্যে ঘরে থাকবেন, নাকি আবারও উদ্বাস্তু হবেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, "আমার ঘর এখানেই, তবে কেন আমাকে পালিয়ে গিয়ে তাঁবুতে থাকতে হবে?"
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত জিএইচএফ ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে ২ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে জাতিসংঘের মানবিক দপ্তর (ওসিএইচএ) সতর্ক করেছে— গাজায় ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষ আরও মারাত্মক আকার ধারণ করছে। জরুরি সেবাগুলো ভেঙে পড়েছে এবং প্রতিদিন বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছেন আরও তিনজন। এর ফলে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ৩০৩ জনের, যাদের মধ্যে ১১৭ জন শিশু।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে