মার্কিন হামলার জবাবে বহু আলোচিত ‘খায়বার’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান চালিয়েছে ইরান। এই হামলায় তেল আবিবসহ অন্তত ১০টি অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (২২ জুন) ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) বরাতে এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
‘খায়বার’ নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রকৃত নাম খোররামশহর-৪। এটি ইরানের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি চতুর্থ প্রজন্মের মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। সর্বোচ্চ ২ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র দেড় হাজার কেজি ওজনের ওয়ারহেড বহন করতে পারে, যা ইরানের বিদ্যমান অস্ত্র ভাণ্ডারের মধ্যে অন্যতম ভারী।
তরল জ্বালানিচালিত এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আকাশে চলার সময় নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং এটি বায়ুমণ্ডলের বাইরে ওয়ারহেডের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা রাখে, যা প্রচলিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে কার্যকর।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে এর গতি বায়ুমণ্ডলের বাইরে ম্যাক ১৬ পর্যন্ত পৌঁছায়— অর্থাৎ শব্দের গতির ১৬ গুণ— এবং বায়ুমণ্ডলের মধ্যে ম্যাক ৮। এতে করে এটি প্রতিপক্ষের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর জবাবে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ নামের পাল্টা অভিযান চালায়। এ অভিযানে ব্যবহৃত খায়বারসহ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যূহ ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানে। এতে হতাহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি।
এর আগে, গত ১৩ জুন রাতভর ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় হঠাৎ হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। তেহরানসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত সেই হামলায় দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসির কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের প্রধান জেনারেল গোলাম আলি রশিদ, ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ প্রায় ৪০০ জন নিহত হন বলে ইরান দাবি করেছে।
ইরানের পাল্টা হামলার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর মধ্যেই ২১ জুন গভীর রাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত আরও বিস্তৃত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে