গাজার পুরো জনগণ এখন দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখোমুখি বলে হুঁশিয়ার করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার (২৩ মে) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা এখন সবচেয়ে নিষ্ঠুর পর্ব পার করছে।”
গুতেরেস সরাসরি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, “কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ৪০০ লরি প্রবেশের অনুমতি পেলেও মাত্র ১১৫টি লরির সহায়তা বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। গাজায় ঢোকার অনুমোদন মিলছে, কিন্তু বাস্তবে সহায়তা পৌঁছাচ্ছে এক চা-চামচের মতো।”
জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা কিছু গমের আটা, শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য এবং ওষুধ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে চার-পঞ্চমাংশ গাজা এখনও সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য নিষিদ্ধ।
গাজায় স্বাস্থ্যখাতের ওপর ইসরায়েলি হামলা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। জাতিসংঘ জানায়, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৭০০-রও বেশি হামলা হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৯টি আংশিক চালু রয়েছে, এবং এর মধ্যে পুরোপুরি কার্যকর মাত্র ১২টি। গত সপ্তাহেই যুদ্ধের কারণে চারটি প্রধান হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে—এর মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া হাসপাতাল, ইউরোপিয়ান গাজা, কামাল আদন ও হাম্মাদ হাসপাতাল।
গুতেরেস বলেন, “গাজায় আমরা একটি যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের চেষ্টা করছি। সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। দ্রুত সহায়তা না পৌঁছালে আরও অনেক নিরীহ মানুষ মারা যাবে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া হিসেবে টানা সামরিক অভিযান চলছে গাজায়। এই অভিযানে প্রায় ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ২২ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানালেও এখনো কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে