ভারতের মিসাইল হামলার পাল্টা জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্রিগেড সদরদপ্তরে আঘাত হেনেছে পাকিস্তান। বুধবার (৭ মে) ভোররাতে পাকিস্তানের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম পিটিভিকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রিগেড সদরদপ্তরটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সীমান্ত রেখার (এলওসি) দুদনিয়াল সেক্টরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি চৌকিও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানান, পাকিস্তানের বিমান বাহিনী প্রতিশোধমূলক হামলায় এখন পর্যন্ত ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। বুধবার প্রথম প্রহরে জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ভারতের আগ্রাসনের যথাযথ জবাব দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুত।”
সামা টিভি জানায়, ভারতের তিনটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে। এর মধ্যে দুটি রাফায়েল এবং একটি এসইউ-৩০ বিমান রয়েছে। একটি বিমান ভূপাতিত হয়েছে বাহাওয়ালপুর সীমান্তের কাছে, অন্যটি কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার আওয়ান্টিপোরার দক্ষিণ-পশ্চিমে।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের সব বিমান সফলভাবে ঘাঁটিতে ফিরে এসেছে এবং কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত বিমান ভূপাতিতের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। দেশটির কিছু সংবাদমাধ্যম পাকিস্তানের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে।
এদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জম্মুর ভিম্বার গলিতে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে কামান থেকে গোলা নিক্ষেপ করেছে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, পাকিস্তানি গুলিতে কাশ্মীরে দুই নারী আহত হয়েছেন, যাদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতের হামলাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার সামিল’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, “এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানি জাতি কোনো হুমকির কাছে মাথা নত করবে না।”
এর আগে মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, এগুলো ছিল জঙ্গি প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা ঘাঁটি। ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছে, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে। জয় হিন্দ।”
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পাল্টা জবাবে জানিয়েছে, ভারত শুধু বেসামরিক এলাকাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। আইএসপিআর মহাপরিচালক আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, বাহাওয়ালপুর, কোটলি এবং মুজাফফরাবাদে বিমান হামলায় সাতজন নিহত, যার মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১২ জন।
নতুন করে শুরু হওয়া এই সামরিক উত্তেজনার সূত্রপাত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন ভারতীয় পর্যটকের ওপর বন্দুকধারীদের হামলা থেকে। এরপর দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে এবং অবশেষে সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :