AB Bank
ঢাকা সোমবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

দৃষ্টি সমস্যায় ভুগছে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ শিশু


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৬:১৪ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
দৃষ্টি সমস্যায় ভুগছে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ শিশু

যুক্তরাজ্যের চক্ষু বিশেষজ্ঞদের একটি দলের সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রতি তিন জন শিশুর একজন মায়োপিয়া নামের চোখের অসুখে ভুগছে। এই রোগে আক্রান্তরা দূরদৃষ্টির সমস্যায় ভোগে, অর্থাৎ স্বাভাবিক দূরত্বে থাকা বস্তু অস্পষ্ট দেখে।

বিশ্বের ৬টি মহাদেশের ৫০ লাখ বিভিন্ন বয়সী শিশুর তথ্য সংগ্রহ এবং সেসব তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে গবেষণা প্রবন্ধ প্রস্তুত করেছেন তারা। ব্রিটেনের বিখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী জার্নাল অব অপথামোলজিতে প্রবন্ধটি ছাপা হয়েছে।

প্রবন্ধে গবেষকরা বলেছেন, এশিয়া মহাদেশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এই মহাদেশের অর্ধেকেরও বেশি শিশু দৃষ্টি সমস্যায় ভুগছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় রয়েছে এই মহাদেশের দুই উন্নত দেশ জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া। জাপানের ৮৫ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ৭৩ শতাংশ রোগী মায়োপিয়ায় আক্রান্ত।  

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সাল থেকে ২০২৩— ৩৩ বছরে বিশ্বজুড়ে দৃষ্টিশক্তির সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের হার বেড়েছে ৩৬ শতাংশেরও বেশি।

মায়োপিয়া রোগটি মূলত জেনেটিক। পিতা-মাতা বা রক্তসম্পর্কিত ঘনিষ্ঠ কেনো আত্মীয়ের এই সমস্যা থাকলে উত্তরাধিকারসূত্রে তা শিশুদের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বজুড়ে শিশুদের মধ্যে মায়োপিয়ার এই উল্লম্ফণ শুধু জেনেটিক কারণে হয়নি, অন্যন্য কিছু প্রভাবও এখানে বেশ বড় ভূমিকা রেখেছে।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, জন্মের পর থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আমাদের চোখ গঠিত হতে থাকে। কোনো ব্যক্তির ছোটো বেলায় যদি চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, তাহলে তার মায়োপিয়া সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং তা কখনও নিরাময় হয় না।

গবেষণা প্রবন্ধে ব্রিটিশ চক্ষুবিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যেসব দেশে অল্প বয়সে শিশুদের স্কুলে ভর্তি করা হয়, সেসব দেশের শিশুদের মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুরের অধিকাংশ শিশুর দৃষ্টি সমস্যার বড় কারণ এটি।

আবার দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার শিশুদের মধ্যে মায়োপিয়ায় আক্রান্তের হার অনেক কম পাওয়া গেছে। এ দু’টি অঞ্চলে শিশুরা গড়ে ৭ কিংবা ৮ বছর বয়সে স্কুলে ভর্তি হয়।

এছাড়া শিশুদের মধ্যে মায়োপিয়ার হার ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে করোনা মহামারির পর। কারণ মহামারির সময় শিশুরা দিনের পর দিন ঘরবন্দি ছিল এবং প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা কাটিয়েছে মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ কিংবা টেলিভিশন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থেকে। এসব ইলেকট্রিক গেজেট থেকে আসার রশ্মি দিনের পর দিন চোখে ঢুকলে এক সময় শিশুদের দূরের দৃষ্টিক্ষমতা কমে যায়।

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, “আমাদের হাতে থাকা তথ্য বলছে বিশ্বজুড়ে মায়োপিয়ার এই উল্লম্ফণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ করোনা মহামারি। আমাদের শিশুদের ইলেকট্রিক গেজেটের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতার শুরু এই মহামারির সময় থেকেই।”


গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, এই অবস্থা যদি চলতে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যক শিশু মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

এই রোগের উপসর্গগুলো হলো—
১. স্বাভাবিক দূরত্বে থাকা জিনিস দেখতে সমস্যা হওয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, স্কুলের ক্লাসবোর্ডের লেখা অস্পষ্ট দেখা।
২. শিশুদের টিভি কিংবা কম্পিউটার স্ক্রিনের কাছাকাছি বসার প্রবণতা, মোবাইল বা ট্যাবলেটের লেখা একদম মুখের কাছে নিয়ে গিয়ে দেখা।
৩. মাথাব্যাথা করা
৪. ঘন ঘন চোখ কচলানোর প্রবণতা

মায়োপিয়া থেকে শিশুর সুরক্ষা
ব্রিটেনের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল হার্ডিম্যান ম্যাককার্টনি বিবিসিকে বলেন, মায়োপিয়ার কোনো চিকিৎসা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি, তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

যেমন—
১. ৭ থেকে ৯ বছর বয়সী প্রতিটি শিশুর দিনের বেলা অন্তত দুই ঘণ্টা বাড়ির বাইরে সূর্যালোকে কাটানো উচিত।
২.যেসব অভিভাবকের ৭ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশু রয়েছে, তাদের উচিত অন্তত একবার নিজের সন্তানের চোখ টেস্ট করানো।
৩. সম্প্রতি একধরনের বিশেষ কন্টাক্ট লেন্স বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যেসব কমবয়সী শিশু মায়োপিয়াতে ভোগে, তাদের এই রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই লেন্স সহায়ক। তবে বিশেষ এই লেন্স ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

একুশে সংবাদ/ঢা.প./সাএ

 

Link copied!