AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নেচে-গেয়ে গান শুনিয়ে আনন্দ দেওয়ায় গায়েনের কাজ


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১২:৫০ পিএম, ২৯ মে, ২০২১
নেচে-গেয়ে গান শুনিয়ে আনন্দ দেওয়ায় গায়েনের কাজ

গায়ে লাল পাঞ্জাবি আর মুখে বাহারি রং মেখে প্রতিদিনই বাড়ি থেকে বের
হন বাবুল হোসেন বাবু। জীবিকার তাগিদে প্রায় ছুটে
আসেন নওগাঁর আত্রাই আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনসহ জেলার
বিভিন্ন এলাকার পথে প্রান্তরে। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের
গান শুনিয়ে আনন্দ দিয়ে কিছু পয়সা পেলেই এতেই তিনি খুশি।
বাহারি সাজের এ মানুষটি গান শোনানোর সময় চোখে মুখে
আনন্দ থাকলেও বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই তার বুকরে
ভেতরে লুকিয়ে আছে এক সাগর কষ্ট।

পৃথিবীতে আপন বলতে জন্মদাতা মা ও দুই মেয়ে ছাড়া বাবুলের আর
কেউ নেই। জীবন সঙ্গিনী স্ত্রীকে হারিয়েছেন অনেক আগেই।
তাইতো সংসার চলাতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে গান আর
গল্প শুনান তিনি। বাহারি পোশাকের এ মানুষটি হারমোনিয়াম
কাঁধে নিয়ে জীবিকার তাগিদে ছুটে বেড়ান পুরো জেলা
জুড়ে। গান শেষে খাবার খেয়ে পথের ধারে, রেলস্টেশন কিংবা বাস
টার্মিনালে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। অকালে স্ত্রীকে হারানোর
বেদনা অন্যদিকে সংসারে অভাব। সবমিলে নিজের বুকে হাজারো
কষ্ট চেপে রেখে অন্যদের গান শুনিয়ে আনন্দ দেওয়া সত্যিই অনেক
কষ্টের।

আর এমন কষ্টের কাজ প্রায় এক যুগ ধরে করে আসছেন নওগাঁ সদর
উপজেলার ভিমপুর গ্রামের বাবুল হোসেন বাবু। এলাকায় সবাই
তাকে বাবু গায়েন বলেই চেনেন। শুধু আত্রাই রেলস্টেশনেই নয়
জীবিকার তাগিদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে গান
করেন বাবু গায়েন।

আলাপচারিতায় বাবুল হোসেন বাবুর সাথে কথা হলে তিনি
সাংবাদিকদের বলেন, আগে গ্রামে গ্রামে যাত্রাপালায় গান
অভিনয় করতাম। এখন আর যাত্রাপালার দিন নাই। তাই ১২ বছর ধরে
বিভিন্ন জায়গায় গান করে বেড়াই। বয়সের কারণে কাজ করতে
পারিনা এজন্য কেউ কাজে নেয় না। ছোট বেলায় বাবাকে
হারিয়েছি। স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। সেই ছোট বেলা
থেকেই সংসার আমাকে চালাতে হয়েছে। বিয়ের সাত বছরের
মাথায় তিনটি মেয়ে হয় আমাদের। কী কপাল আমার ! বড় মেয়ে ৫
বছর, মেঝো মেয়ে ৩ বছর আর ছোট মেয়ের বয়স যখন ৬ মাস তখন
আমার স্ত্রীও মারা যায়। খুব কষ্টে আমি আর আমার মা মিলে দুটি
মেয়েকে বড় করেছি। প্রতিদিন গান করে যে টাকা উপার্জন হয়
দিন শেষে সেই টাকা দিয়ে মেয়ের জন্য দুধ কিনে বাড়িতে
যেতাম। যেদিন টাকা কম উপার্জন হত সেদিন আর দুধ কেনার পর
চাল ও বাজার সওদা করতে পারতাম না। গান করে যে টাকা উপার্জন
হয় তা থেকে একটু একটু করে কিছু টাকা জমিয়ে বড় দুটি
মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এখন আর একটি মেয়ে আছে, ১২ বছর
বয়স তার।

তিনি আরও জানান, বগুড়ার সান্তাহার, নওগাঁ, নাটোর, গাইবান্ধা,
জয়পুরহাট, রাজশাহী, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে
ঘুরে গান করি। মানুষ আমার গান শুনে যে টাকা দেয় তাতেই
আমার সংসার চলে। প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়।
আবার কোনো দিন ২০০ টাকাও উপার্জন হয়। দুই মেয়েকে বিয়ে
দেওয়ার সময় লোন নিয়েছিলাম। এখন প্রতিমাসে তার কিস্তি
দিতে হয়।

সংসারের অভাবের কারণে আমি পড়ালেখা করতে পারিনি। আমার
মেয়েদেরও পড়ালেখা করাতে পারিনি। বাবুলের গান শুনে মুগ্ধ হয়
সান্তাহার স্টেশন থেকে বিভিন্নস্থানে যাওয়া জন্য অপেক্ষারত ট্রেন
যাত্রীরা। খুশি হয়ে যে যেমন পারে টাকা দেয়। এভাবেই চলছে
বাবুলের জীবন সংগ্রাম। 

 

 

একুশে সংবাদ/নাজমুল/ব 
 

Link copied!