২০২৫-২৬ বাজেট: যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আজ (২ জুন) ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে বাজেট বক্তব্য সম্প্রচার করা হবে। এবারের প্রায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক ও ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব থাকছে, যার ফলে এসব পণ্যের দাম কমে যেতে পারে। সাধারণ মানুষের জন্য এসব খবর স্বস্তিদায়ক।

দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের:

১. এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস):
এলএনজি আমদানিতে ১৫% ভ্যাট প্রত্যাহার করা হতে পারে। এতে আমদানির খরচ কমে যাওয়ায় গ্যাসের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

২. জ্বালানি তেল:
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানিতে শুল্ক ৫% থেকে ১% এবং অন্যান্য জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে ১০% থেকে ৩% করার প্রস্তাব রয়েছে। এতে বাজারে তেলের দাম কিছুটা কমতে পারে।

৩. চামড়া শিল্পের কাঁচামাল:
চামড়া প্রক্রিয়াজাতে ব্যবহৃত কিছু রাসায়নিক উপাদানের ওপর শুল্ক ৫% থেকে ১% করা হতে পারে। এতে কোরবানির পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ সহজ হবে।

৪. নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য:
ধান, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ডাল, ভুট্টা, লবণ, চিনি, তেল, ফলসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের আমদানিতে উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব রয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

৫. ভূমি নিবন্ধন:
কাঠার পরিবর্তে শতাংশে হিসাব করে নিবন্ধন ফি নির্ধারণ, এবং অগ্রিম কর কিছুটা কমানোর প্রস্তাব থাকছে, যা জমি কেনাবেচায় খরচ কিছুটা কমাবে।

৬. চিনি:
পরিশোধিত চিনির আমদানিতে শুল্ক প্রতি টন ৪,৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৪,০০০ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে। এতে চিনির দাম কিছুটা কমতে পারে।

৭. সয়াবিন ও কাগজ শিল্পের কাঁচামাল:
সয়াবিন মিল, নিউট্রালাইজড সয়াবিন তেল, ফেনোলিক রেজিন, স্যান্ডপেপার জাতীয় কাঁচামালের ওপর শুল্ক কমানো হচ্ছে।

৮. নিউজপ্রিন্ট:
সংবাদপত্রে ব্যবহৃত নিউজপ্রিন্টের আমদানিতে শুল্ক ৫% থেকে ৩% করার প্রস্তাব থাকছে, এতে পত্রিকা প্রকাশনা ব্যয় কমবে।

৯. ক্রিকেট ব্যাট:
ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কাঠ আমদানিতে শুল্ক ৩৭% থেকে ২৬% করার প্রস্তাব থাকছে। এতে ব্যাটের দাম কমে যেতে পারে।

১০. সফটওয়্যার খাত:
বিদেশি অপারেটিং সিস্টেম ও ডেভেলপমেন্ট টুলসের শুল্ক ১০% থেকে ৫% কমানো হতে পারে। দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পে সহায়তা করবে এটি।

১১. মাটির ও পাতার তৈজসপত্র:
এগুলোর ওপর থাকা ১৫% ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে। এতে এসব পরিবেশবান্ধব পণ্যের দাম আরও কমবে।

১২. বিদেশি জুস:
নন-অ্যালকোহলিক জুসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ১৫০% থেকে কমিয়ে ১০০% করার প্রস্তাব থাকছে, ফলে দাম কমে আসতে পারে।

১৩. পিভিসি পাইপ ও কপার ওয়্যার:
উপকরণের আমদানিতে পিভিসি পাইপে শুল্ক ২৫% থেকে ১৫% এবং কপার ওয়্যারে ১৫% থেকে ৫% করার প্রস্তাব রয়েছে। ফলে অবকাঠামো নির্মাণ খরচ কমে যেতে পারে।

১৪. গাড়ির যন্ত্রাংশ ও নির্মাণসামগ্রী:
টায়ার, টিউব, ব্রেক সু, ব্রেক প্যাড, মার্বেল ও গ্রানাইটের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব রয়েছে, যা পরিবহন খরচ ও নির্মাণ ব্যয় কমাতে পারে।

আগামী বাজেট কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভোগ্যপণ্য ও শিল্প-সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট কমিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করার চেষ্টা করছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ বিকেলে বাজেট ঘোষণার পরই জানা যাবে।

একুশে সংবাদ / আ.ট/এ.জে