বাইরে কাগজে ঝুলছে ‘পেঁয়াজ নেই’- এমন ঘোষণা। অথচ আড়তে বস্তায় বস্তায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে পেঁয়াজ। উদ্দেশ্য কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি। গত দু’দিন ধরে চট্টগ্রামের সব পাইকারি বাজারে চলছে এমন নৈরাজ্য। পাশাপাশি সীমান্তের মোকাম থেকে একেকটি ফোনকলে বন্দরনগরীর আড়তে মুহূর্তেই বেড়ে যাচ্ছে পেঁয়াজের দাম।
চট্টগ্রামের পাহাড়তলি বাজারে মেসার্স বাঁচা মিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের আড়তে মূল্য তালিকায় লেখা ‘পেঁয়াজ নেই’। অথচ পাশে প্রতিষ্ঠানটির গুদামে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে মেলে ৫০ বস্তারও বেশি পেঁয়াজ। বাড়তি দামের আশায় এসব পেঁয়াজ মজুত করলেও আড়তদারের দাবি, ১৪ বস্তা বিক্রি হয়েছে আগে। কিন্তু দেখাতে পারেননি বিক্রয় রশিদ। এছাড়া বাকি ৩৬ বস্তার কোনো হিসাব দিতে পারেননি।
প্রতিষ্ঠানটির চালানে গত ৮ ডিসেম্বর যে পেঁয়াজ ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, একই পেঁয়াজ পরের দিন বিক্রি হয় ২০০ টাকায়। মেসার্স বাঁচা মিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জানান, সীমান্তের মোকাম থেকে নির্দেশনা অনুসারে দাম বাড়িয়েছেন তিনি।
কেবল এটিই নয়; চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, পাহাড়তলিসহ সব বড় আড়তে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয় একই পদ্ধতিতে। সীমান্ত থেকে মোবাইলে একটি কলেই বদলে যায় দাম। মজুতের পাশাপাশি মুহূর্তের মধ্যেই দাম বাড়ে কয়েকগুণ।
একই অবস্থা খুচরা বাজারেও। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার খবরে বেড়ে যায় খুচরায়ও। যেমন: বায়েজিদের আমিন কলোনি বাজারে ১২০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। যদিও ভোক্তার অভিযানের খবরে আবার সেটি হয়ে যায় ১২০ টাকা।
মোকাম থেকে ফোনকলে দাম বাড়ানোর কথা জানে ভোক্তা অধিকারও। কিন্তু কিছু জরিমানা ছাড়া নিতে পারে না বড় কোনো ব্যবস্থা।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. ফয়েজ উল্ল্যাহ জানান, আরেকজন অন্যপ্রান্ত থেকে মোবাইলে হঠাৎ করে দাম বাড়িয়ে দেবে, আর ব্যবসায়ীরা তা মেনে নেবে এবং সে দামে বিক্রি করবে। তাতে অবশ্যই ব্যবসায়ীদের দায় নিতে হবে।
পেঁয়াজের বাজারে এমন অস্থিরতা ঠেকাতে নিয়মিত মনিটরিংয়ের পাশাপাশি বিকল্প কোনো দেশ থেকে আমদানির দাবি ভোক্তাদের।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :