কুড়িগ্রামের উলিপুরে দোকান চুরির ঘটনায় থানায় জিডি করাকে কেন্দ্র করে বিবাদীর হামলায় দুইজন আহত। গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের গাবেরতল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা হলেন, এস.এম আনিছুর রহমান (৪৮) ও আলমগীর রহমান (৩৬) গুনাইগাছ ইউনিয়নের জুম্মাহাট এলাকার সবেদ আলীর ছেলে। আহত আলমগীরের চোখের উপর ভ্রুতে ও ঠোটে ১৬টি ও আনিছুরের শরিরে ৬টি সেলাই পড়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গুনাইগাছ ইউনিয়নের পূর্ব কালুডাঙ্গা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান ওরফে হুদা গুনাইগাই ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এ আর পাবলিক স্কুল সংলগ্ন আব্দুল মান্নানের কনফেকশনারী দোকান চুরি করে ধরা পড়লে মারডাং করে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ক্ষমা করে দেন। পরে এই ঘটনায় আব্দুল মান্নান উলিপুর থানায় একটি জিডি করেন।
জিডির বিষয়টি মেহেদী হাসান হুদা ও তার পরিবার জানতে পারলে প্রতিশোধ পরায়ন ওঠে এবং মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টম্বর) রাতে গুনাইগাছ গাবেরতল নামক স্খানে মেহেদী হাসান হুদা ও তার পরিবারের লোকজন মান্নানের শ্যালক আনিছুর রহমানকে একা পেয়ে হামলা ও হামলাকারীদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। আনিছুরের চিৎকারে তার ভাই আলমগীর হোসেন ও আজাদুন্নবী আজাদ এগিয়ে আসলে আলমগীরকে একইভাবে কোপাতে থাকে। ইতোমধ্যে লোকজনের সমাগম বুঝে মেহেদী ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে আনিছুর রহমানের আরেক ভাই আশরাফুল আলম বাদী হয়ে উলিপুর থানায় গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, মেহেদী হাসান হুদা (২৪), সোহেল রানা (২৮), স্বাধীন মিয়া (২৯), কুরাইশি (২০), লুৎফর রহমান (৫৫), জান্নাতি বেগম (২৬) ও অজ্ঞাত কয়েকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, গুনাইগাছ ইউনিয়নের পরিষদের সামনে `এসো কাজ করি` নামে একটি এনজিও ছিলো যেটি এখন বন্ধ। ওই এনজিও`র সামনে লুৎফর রহমানের একটি দোকান ছিলো। এনজিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে ওই দোকানটি অনেকদিন বন্ধ থাকায় সেখানে সুযোগ নিয়ে বাদিপক্ষরা একটি দোকান দেয়। ওই দোকানঘরকে কেন্দ্র করে বাদি-বিবাদির মধ্যে বিগত দিনে কয়েকবার ঝগড়াঝাটি হয় স্থানীয়ভাবে মিমাংসাও হয়। ওই দোকানঘরকে কেন্দ্র করেই উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিবাদ চলে আসছে। তারা আরো জানান, মারামারির ঘটনাটি শতভাগ সত্য এবং ওই মামলার এক নং আসামি মেহেদী হাসান হুদা একজন মাদকসেবি ও ব্যবসায়ী। তবে মামলায় যাকে দুই নম্বর আসামি (সোহেল রানা) দেখানো হয়েছে ঘটনার দিন তিনি উপস্থিত ছিলো না। তারা আরো বলেন, হুদার বিচার না হলে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে।
এ বিষয়ে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীদের ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে