মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মেদিনী মণ্ডল ইউনিয়নের কাজির পাগলা কবরস্থানের রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। এ কারণে স্থানীয়দের পাশাপাশি হাজারো মানুষের যাতায়াতে মারাত্মক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় কাজির পাগলা কবরস্থানে প্রায় দুই শতাধিক ভুক্তভোগী এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে দ্রুত রাস্তা সংস্কারের দাবিতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তাটি কাজির পাগলা অভয় তালুকদার ইনস্টিটিউশনের পেছন থেকে শুরু হয়ে কাজির পাগলা কবরস্থান হয়ে মরহুম আব্দুল কাদির সড়কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে মিশেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক বছর আগে সরকারি বরাদ্দে ঠিকাদার কাজ শুরু করলেও ছয় মাস আগে কাজ অসম্পূর্ণ রেখে পালিয়ে যায়। এতে রাস্তা এখন সম্পূর্ণ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এই রাস্তাটি ব্যবহার করে আশপাশের তিনটি গ্রামের মানুষ তাদের প্রিয়জনদের কবরস্থানে নিয়ে যান। একইসঙ্গে শতবর্ষী কাজির পাগলা বাজার ও কাজির পাগলা অভয় তালুকদার ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ শতশত মানুষ প্রতিদিন এ রাস্তা ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়া শ্রীনগর উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত এই পথ দিয়ে কাজির পাগলা হাইস্কুলে যাতায়াত করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার রাস্তার মাঝখান থেকে মাটি তুলে দুই পাশে ফেলে রাখায় বৃষ্টির সময় পুরো রাস্তা খালে পরিণত হয়। এতে হেঁটে যাওয়া তো দূরের কথা, মৃতদেহ কবরস্থানে নেওয়াটাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, প্রতিদিন জরুরি রোগী নেওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে না পারায় রোগীরা বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়তে হচ্ছে। সামাজিক অনুষ্ঠানেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
এলাকার প্রবীণরা বলেন, রাস্তার দুই পাশে ঝোপঝাড় গজিয়ে ওঠায় এটি এখন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। অন্ধকার নামলে মহিলাদের একা চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে স্থানীয়রা নিত্যদিন ভয়ে-আতঙ্কে চলাফেরা করছেন।
কাজির পাগলা অভয় তালুকদার ইনস্টিটিউশনের শিক্ষার্থীরা জানান, আগে এ পথে সহজে আসা-যাওয়া করা গেলেও এখন ভয়ে তাদের অনেককে বিকল্প পথে ছয় কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে আসতে হয়। ফলে ঝুঁকি নিয়েই অনেক শিক্ষার্থী কষ্ট করে এই রাস্তা ব্যবহার করছে।
এই বিষয়টি নিয়ে এলাকার দুই শতাধিক মানুষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তারা বলেন, “এই রাস্তা দ্রুত সংস্কার না হলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। লাশ দাফন থেকে শুরু করে রোগী পরিবহন কিংবা স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।”
এ বিষয়ে স্থানীয়রা লৌহজং উপজেলা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নেছার উদ্দিন বলেন, সরেজমিন খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে