AB Bank
  • ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
নিজের পরিশ্রমে অল্প আয় করে শান্তি পাই

ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে ব্যবসায় প্রতিবন্ধী খলিলুর রহমান


Ekushey Sangbad
এহসান বিন মুজাহির, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
১২:৫২ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে ব্যবসায় প্রতিবন্ধী খলিলুর রহমান

খুঁড়িয়ে হাঁটেন খলিলুর রহমান (৪০)। হাতে বাদামভর্তি ছোট ছোট কয়েকটি পলিথিনের প্যাকেট। ভিক্ষাবৃত্তির পথ ছেড়ে এখন তিনি বাদাম বিক্রেতা। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের কালিঘাট রোডের চলন্ত খেলার মাঠে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

তিনি বলেন, “আগে ভিক্ষা করতাম। ভিক্ষা করলে মানুষ খারাপ বলে, তাই এখন বাদাম বিক্রি করি।”

প্রায় দুই যুগ ধরে শ্রীমঙ্গলের রেলওয়ে কলোনি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন খলিলুর রহমান। সংসারে অভাব ও শারীরিক সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি সেই পথ থেকে নিজেকে সরিয়ে বাদামের ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করেছেন।

জন্মলগ্ন থেকেই খলিলুর রহমানের দুই হাত ও এক পা বিকলাঙ্গ। চিকিৎসায় পরিবারের সঞ্চয় ফুরিয়ে যায়, তবুও সুস্থতা ফেরেনি। পরে সংসারের দায়ে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন। বয়স হওয়ার পর বিয়ে করেন তিনি। বর্তমানে তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্রের জনক। বড় মেয়ে নুসরাত জাহান নবম শ্রেণিতে, ছেলে আব্দুল বাসিত নাঈম তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে ইসরাত জাহান দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

শহরের বিসমিল্লাহ গরুর মাংসের দোকানের মালিক আব্দুল মতিন জানান, “প্রতি সপ্তাহে একদিন অসহায় মানুষের মাঝে বিনামূল্যে মাংস বিতরণ করি। কয়েকদিন আগে খলিলুর রহমান মাংস নিতে আসলে তাকে ভিক্ষা না করে কাজ করার পরামর্শ দিই এবং ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য সামান্য মূলধন দিই। আমার দেওয়া পুঁজি নিয়েই তিনি বাদাম বিক্রি শুরু করেন।”

এখন খলিলুর রহমান প্রতিদিন প্রায় ২০০ প্যাকেট বাদাম বিক্রি করেন। বিক্রির পরিমাণ প্রায় দুই হাজার টাকা, যেখানে দৈনিক লাভ থাকে প্রায় পাঁচশ টাকা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মুহম্মদ কালু গাজী বলেন, “কয়েক মাস আগেও তিনি ভিক্ষা চাইতেন। সম্প্রতি আমার দোকানের সামনে এসে বললেন— এখন তিনি বাদাম বিক্রি করেন। তার এই পরিবর্তন দেখে আমি খুব আনন্দিত।”

খলিলুর রহমান বলেন,“ভিক্ষা করে দিনে কয়েক হাজার টাকা রোজগার করতাম, কিন্তু শান্তি পেতাম না। নিজেকে অপরাধী মনে হতো। এখন নিজের পরিশ্রমে অল্প আয় করেও শান্তি পাই। সংসারের ব্যয়ভার সামলাতে কষ্ট হলেও আগের চেয়ে সম্মান বেড়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “সহৃদয় কেউ আর্থিকভাবে সাহায্য করলে ব্যবসা আরও এগিয়ে নিতে পারব।”

ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ শুরু করায় খলিলুর রহমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসিত হচ্ছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, “ভিক্ষাবৃত্তি থেকে ফিরে ব্যবসায় যুক্ত হওয়া অবশ্যই প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। যাচাই করে তাঁকে সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

 

একুশে সংবাদ/মৌ.প্র/এ.জে

Link copied!