ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের আতাইঘাটে টাঙ্গন নদীর ওপর ব্রিজ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন পীরগঞ্জ ও সেতাবগঞ্জ উপজেলার ৬ ইউনিয়নের মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পারাপার হলেও কৃষিপন্যসহ অন্যান্য মালামাল আনার জন্য প্রায় ৪০ কিমি ঘুরে পীরগঞ্জ শহর হয়ে যেতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। তবে ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ অনেকদূর এগিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কনসালটেন্ট জানিয়েছেন।
জানা যায়, টাঙ্গন নদী পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়ন ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত দিয়ে বয়ে গেছে। জাবরহাট ঘাটের পশ্চিম পাশে পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট, দৌলতপুর, সেনগাঁও ও হাজীপুর ইউনিয়ন, আর পূর্বপাড়ে সেতাবগঞ্জ উপজেলার রনগাঁও ও নাফানগর ইউনিয়ন অবস্থিত। দুই উপজেলার এই ৬ ইউনিয়নের মানুষ প্রতিদিনের যোগাযোগে একমাত্র ভরসা হিসেবে নৌকায় নদী পারাপার করেন।
নৌকায় যাতায়াত সম্ভব হলেও কৃষিপন্যসহ ভারী মালামাল আনার জন্য প্রায় ৪০ কিমি ঘুরে পীরগঞ্জ শহর হয়ে যাওয়া লাগে। এছাড়া ঘাটের দুই পাশে সেতাবগঞ্জ ও জাবরহাট নামে দুটি বড় বাজার রয়েছে, যেখানে কৃষিপন্যসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বেচা-কেনার জন্য মানুষজনকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নদীর এপারে পীরগঞ্জ উপজেলায় সেতাবগঞ্জ চিনিকলের কয়েকটি ফার্মের আখও ৪০ কিমি ঘুরে চিনিকলে নিতে হয়, যা সময় ও খরচ বৃদ্ধি করে।
স্থানীয়রা মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছেন। বিএনপি নেতা আকতার হোসেন বলেন, “বর্ষা মৌসুমে নৌকায় নদী পারাপারের সময় প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। ছাত্র-ছাত্রীর বই-খাতা ভিজে যায়। আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি।” ঘাটের পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দা কাকন বালা বলেন, “নদীর পূর্বপাড়ে আমাদের একটি বড় মন্দির আছে, যেখানে প্রতি বছর বড় মেলা বসে। ব্রিজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যেতে হয়।”
জাবরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া জানান, “ব্রিজ নির্মাণ হলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সামাজিক অবস্থা ব্যাপকভাবে উন্নত হবে।”
ইকিউএমএস নামের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সহকারী কনসালটেন্ট শাহরিয়ার হোসেন সিয়াম জানান, “ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রাথমিক কাজ অনেকাংশে শেষ হয়েছে। আরও দুটি টিম সরেজমিনে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এরপরই ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হবে।”
উপজেলা প্রকৌশলী মাঈদুলা ইসলাম জানান, “ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
একুশে সংবাদ/ঠা.প্র/এ.জে