ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই শিক্ষার্থী গুমের ঘটনার সাড়ে ১৩ বছর পেরোলেও তাদের সন্ধান মেলেনি। গত শনিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে প্রশাসন ভবনের সামনে গুম হওয়া ওয়ালিউল্লাহ ও আল-মুকাদ্দাসকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করে শাখা ছাত্রশিবির। পরে এবিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানে পূর্বের গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি পুনর্গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ সোমবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
৬ সদস্যের পুনর্গঠিত কমিটিতে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান শেখকে আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আ হ ম তরীকুল ইসলাম, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ও ছাত্র উপদেষ্টা ড. ওবায়দুল ইসলাম, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম এবং কুষ্টিয়া জেলা দায়রা জজ আদালতের এ্যাডভোকেট এস এম শাতিল মাহমুদ।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান শেখ বলেন, আমি ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। আমার সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই তারা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। ক্যাম্পাসে ফিরে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা দেখবো।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, এরআগে ওই দুই শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির মানববন্ধনের প্রেক্ষিতে গত ৬ জানুয়ারি এবিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানে তিন সদস্যের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে রোববার এটি পুনর্গঠন করে ৬ সদস্যের কমিটি করেছে উপাচার্য। কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওয়ালিউল্লাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং তৎকালীন শাখা ছাত্রশিবিরের অর্থ সম্পাদক ছিলেন। আল-মুকাদ্দাস ছিলেন তৎকালীন আল ফিকহ বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রশিবিরের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক। ২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ঢাকা-কুষ্টিয়াগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজের ৩৭৫০ নম্বর গাড়িতে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে আশুলিয়ার নবীনগর থেকে ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাসকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে। এরপর থেকে তাদের ফিরে পেতে ইবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ধর্মঘট ও বহুবার মানববন্ধন করলেও এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ মেলেনি।
একুশে সংবাদ/এ.জে