জয়পুরহাটের কালাইয়ে ‘ধর্ষণ’ থেকে বাঁচতে মেজবাহুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবকের পুষাঙ্গ কেটে দিয়েছেন তার বাড়ির কাজের মেয়ে। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে উপজেলার পুনট ইউনিয়নের পুনট পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। যুবক মেজবাহুল ইসলাম পুনট পূর্বপাড়া গ্রামের আলহাজ আফতাব হোসেন মন্ডলের ছেলে। আহত অবস্থায় তাকে পরিবারের লোকজন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
এঘটনায় রাতে ওই নারী ও তার স্বামী প্রাণনাশের ভয়ে কালাই থানায় এসে পুলিশ হেফাজতে ছিল।পরে মামলা দায়ের করে তারা উভয়ে থানা থেকে রাতেই চলে যায়।
প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুনট পূর্বপাড়ায় মেজবাহুল ইসলামের বাড়িতে ওই নারী মাঝে-মধ্যে ঝি এর কাজ করতেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় মেজবাহুল ইসলামকে ওই নারী ডেকে নেয়। এরপর মেজবাহুলের পরিত্যাক্ত একটি বাড়িতে তারা দুজনে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ওই নারীর স্বামীও সেখানে উপস্থিত হন। তার স্ত্রী ও মেজবাহুলকে ঘরের ভিতরে দেখে মারপিট শুরু করে। এরপর মেজবাহুলের হাত ওই নারীর স্বামী ধরে, আর পুরুষাঙ্গ কর্তন করে ওই নারী। পরে তারা চিৎকার করতে থাকে। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা মেজবাহুলের পরিত্যাক্ত বাড়িতে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে মেজবাহুলকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে মেজবাহুলের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে।
ওই নারী বলেন,‘সংসারে অভাব। স্বামীও তেমন একটা কাজ করতে পারেনা। তাই ওনাদের বাড়িতে ঝি এর কাজ করি। অনেক আগে থেকেই বাড়ির মালিক মেজবাহুল আমাকে বিরক্ত করত। পেটের দায়ে কাজ করি, তাই কাউকে বলতে সাহস পাইনি। শুক্রবার সন্ধায় মেজবাহুল আমাকে ডেকে নিয়ে বাড়ির কথা বলে তাদের পরিত্যাক্ত একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর মেজবাহুল আমাকে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমি বাধা দিলে আমাকে মারপিট করে। তখন আমি কোনো উপায় না দেখে নিজেকে বাঁচাতে ব্লেট দিয়ে তার লিঙ্গ কেটে দিয়েছি। পরে জানাজানি হলে প্রাণনাশের ভয়ে স্বামীকে নিয়ে কালাই থানায় এসে আশ্রয় নিয়েছি।এবং মেজবাহুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।
মেজবাহুলের বাবা আলহাজ আফতাব হোসেন মন্ডল বলেন,‘কবরস্থানের গাছ কাটার বিষয়ে তাদের সাথে আমাদের দ্বন্দ্ব ছিল। তবুও তাদের অসহায়ত্ব দেখে বাড়িতে মাঝেমধ্যে ওই নারীকে কাজ করতে ডাকা হত। জানিনা তাদের মধ্যে কি সম্পর্ক ছিল? তারপরও আজ আমার ছেলেকে সন্ধ্যার পরে ওই নারী একটা প্রয়োজনের কথা বলে ডেকে নিয়ে বাড়ির পাশে পরে থাকা পরিত্যক্ত একটি ঘর দিকে ডেকে নিয়ে যায়। ওই নারী, তার স্বামী ও স্বামীর ভগ্নিপতি পরিকল্পিতভাবে তাকে মারপিট করে মাটিতে প্রথমে ফেলে দেয়। পরে তার স্বামী ও ভগ্নিপতি মিলে ছেলেকে শক্তভাবে ধরে রাখলে ওই নারী পুরুষাঙ্গ কর্তন করে। আমি তাদের নামে মামলা করতে থানায় এসেছি।’
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন রাত ১২ টার দিকে বলেন,রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। যুবকের পুরুষাঙ্গ কর্তনের ঘটনা সত্য। ভূক্তভোগী ওই নারী ও তার স্বামী রাতেই থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করেন।অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে অপরপক্ষ এখনও কোনো অভিযোগ করেনি। তিনি আরো বলেন,অপরপক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ওই নারী ও তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ/জ.প্র/এ.জে