কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নির্মাণাধীন একটি ভবনকে ঘিরে চাঁদা দাবী, হামলা, প্রাণনাশের হুমকি এবং নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভবন মালিক হাজী মো. গিয়াস উদ্দিন। শনিবার (৩০ আগস্ট) ভৈরব প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের আনোয়ারা জেনারেল হাসপাতালের বিপরীতে ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায় তার নির্মাণাধীন ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। এ সময় প্রভাবশালী রায়হান নামের এক ব্যক্তি একদল লোকজন নিয়ে তার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। দাবীকৃত টাকা না দেওয়ায় তারা হামলা চালিয়ে নির্মাণ সামগ্রী ভাঙচুর এবং শ্রমিকদের মারধর করে। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেন।
এ ঘটনায় হাজী মো. গিয়াস উদ্দিন গত শনিবার (২৫ আগস্ট) ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও ১০–১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর—২৭।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দুই বছর আগে জমি ক্রয়ের পর এক বছর ধরে ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে নবম তলার কাজ চলছে। ২১ আগস্ট বৃহস্পতিবার চাঁদাবাজরা ভবনে হামলা চালিয়ে টিনের বাউন্ডারি, সিমেন্ট, বালু ও বিভিন্ন সামগ্রী নষ্ট করে প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার ক্ষতি করেন। এছাড়া শ্রমিকদের মারধর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাজী গিয়াস উদ্দিন বলেন, “আমি আইন মেনে জমি কিনে ভবন নির্মাণ করছি। অথচ প্রভাবশালী একটি মহল আমার কাছে কোটি টাকার চাঁদা দাবী করছে। চাঁদা না দিলে ভবন নির্মাণ করতে দেবে না, এমনকি আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। আমি মামলা করেছি, কিন্তু এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আসছে, যার কারণে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিল্ডিং সাইট কন্ট্রাক্টর রিয়াজ গাজী বলেন, “আমি শুধু রায়হানকেই চিনি। সে তার লোকজন নিয়ে আমার শ্রমিকদের মারধর করেছে এবং কাজ বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছে।”
অভিযুক্ত রায়হান বলেন, “গত তিন বছর আগে আমার ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু বিক্রি করে ইউএসে যাওয়ার কথা বলে ৫০ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু আমাকে আমেরিকা না পাঠিয়ে তিন দেশ ঘুরিয়ে আবার বাংলাদেশে ফেরত নিয়ে আসা হয়েছে। সেই সময় আমার পৈত্রিক জায়গা বিক্রি হয়ে গেছে, যেখানে তিনি বিল্ডিং করছেন। ওই জায়গায় ঝামেলাও চলছে। আমি সেই বিল্ডিংয়ে গিয়ে তাদের বলেছি আমার টাকা না দিয়ে যেন কাজ না করা হয়। কিন্তু আমার উপর মিথ্যা চাঁদা দাবীর মামলা করা হয়েছে। আমি আমার টাকা ফেরতসহ মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার চাই।”
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “মামলাটি রুজু হয়েছে। তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে