দীর্ঘদিন ধরে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবার মান অত্যন্ত নিম্নমানের হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় গ্রাহকরা। কল ড্রপ, ইন্টারনেটের ধীরগতি ও বারবার নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের দৈনন্দিন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিশেষ করে উপজেলার দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিটক, রবি ও এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক প্রায়ই দুর্বল থাকে। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতেও নেটওয়ার্ক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে মোবাইল ফোনে কথা বলা বা ইন্টারনেট ব্যবহার করা প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয় জনগণ সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, “নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে টাকা লেনদেন করতে সমস্যা হয়। বিকাশ বা নগদে লেনদেন অনেক সময় বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।”
স্থায়ী বাসিন্দা জীবন দে জানান, “বিদ্যুৎ না থাকলে নেটওয়ার্ক একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। তখন কল দেওয়া বা নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হয় না। দীর্ঘদিন এ সমস্যা চলছে, কিন্তু সমাধান হচ্ছে না।”
বাঘাইছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক আব্দুল মাবুদ বলেন, “নেটওয়ার্ক এখন আর বিলাসিতা নয়, এটি মানুষের মৌলিক চাহিদার অংশ। দীর্ঘদিন ধরে নেটওয়ার্ক সমস্যায় ভুগছে বাঘাইছড়ি। বিদ্যুৎ না থাকলে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে জরুরি সময়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না, বিশেষ করে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে।”
তিনি আরও বলেন, “রবি, এয়ারটেল ও টেলিটকের প্রতিনিধিদের বারবার অবহিত করা হলেও তারা শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। বাস্তবে কোনো পরিবর্তন আসছে না।”
সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় টাওয়ার লাইনে নাশকতা ও টাওয়ার টেকনিশিয়ান অপহরণের ঘটনাও ঘটেছে। ফলে নেটওয়ার্ক সমস্যা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
এর আগেও একাধিকবার বাঘাইছড়ির জনগণ নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান চেয়ে অভিযোগ করেছেন ও গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তবে আজও দৃশ্যমান কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
খাগড়াছড়িতে টেলিটক কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের নেটওয়ার্ক ঠিক আছে এবং আরও উন্নত সেবা দিতে তারা কাজ করছে। অন্যদিকে রবি-এয়ারটেল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে, কিছু অভ্যন্তরীণ জটিলতার কারণে যথাযথ সেবা দিতে পারছে না। তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত আছেন এবং সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে