নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে নদীর দুই তীরে অবস্থিত বেড়িবাঁধ ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আত্রাই নদীর পানি ১০০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১২টায় জোতবাজার পয়েন্টে নদীর পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ মিটার উচ্চতায়। পানি আরও এক মিটার বাড়লেই উভয় তীরের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ চরম ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে স্থানীয় প্রশাসন বৃহস্পতিবার দুপুর ১১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এক জরুরি সভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউএনও আখতার জাহান সাথী। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান নওফেল আলী মণ্ডল, অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন মণ্ডল, জায়েদুর রহমান, গোলাম মোস্তফা, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের প্রশাসক ইমরান হোসেন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে বালুর বস্তা, বাঁশ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ মজুত রাখা হবে। পাশাপাশি দুর্যোগকালীন সহায়তার জন্য শুকনো খাবার সংরক্ষণের বিষয়েও আলোচনা হয়।
প্রশাসনের জরিপ অনুযায়ী, উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া, বন্যানিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধের লক্ষীরামপুর, আঁয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ী, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া ও গোয়ালমান্দাসহ আরও ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী বলেন, “আত্রাই নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আমরা আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছি। একই সঙ্গে শুকনো খাবার মজুত ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।”
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে