ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কচু খেত থেকে হোসনে আরা (৩০) নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের কবিরাজবাড়ি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা ও চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
নিহত হোসনে আরা গৌরীপুর উপজেলার কাউলাটিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল গণির মেয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হোসনে আরা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় পরিবারে বসবাস করতেন। তিনি তার মা রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে একটি টিনশেড ঘরে থাকতেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে হোসনে আরা কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন সকালে কয়েকজন শিশু ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে কবিরাজবাড়ি গ্রামের মোশারফ হোসেন মজনুর কচু খেতে একটি নারীর মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে মরদেহটি শনাক্ত করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
হোসনে আরার মা রাবেয়া খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “রাতের শেষ ভাগে আমার মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। সকালে শুনি, আমার মেয়েকে মেরে কচু খেতে ফেলে রেখেছে। আমার মেয়ের কী অপরাধ ছিল? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
বোকাইনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুল ইসলাম খান শহীদ বলেন, “আমি চেয়ারম্যান থাকাকালে হোসনে আরার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দিই। সে মানসিকভাবে অসুস্থ হলেও কারও কোনো ক্ষতি করত না। এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিদারুল ইসলাম বলেন, “মরদেহের গলায় কলাগাছের শুকনো বাকল প্যাঁচানো ছিল। এটি সন্দেহজনক একটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে এবং দ্রুত একটি মামলা দায়ের করা হবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দ্রুত প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/ম.প্র/এ.জে