মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হরিন্দী গ্রামে এক হিন্দু পরিবারের সদস্যদের চেতনানাশক প্রয়োগে অজ্ঞান করে মালামাল চুরির ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইদ্রিস আলী থানার গোলঘরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন। সেখানে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠের মাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ওসি (তদন্ত) আবু বকর, শ্রীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ড. মুসাফির নজরুল, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মনোরঞ্জন সরকার, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রথীন্দ্রনাথ রায়সহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাংবাদিকবৃন্দ।
লিখিত বক্তব্যে ওসি জানান, গত ২৭ মে মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে ২৮ মে বুধবার সকাল ৯টার মধ্যে হরিন্দী গ্রামের কিশোর কুমার রায় মধু ও হিমাংশু শেখরের বাড়িতে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা চেতনানাশক প্রয়োগ করে তাদের অচেতন করে ফেলে। রাতে খাবার খাওয়ার ৩০-৪০ মিনিট পর কিশোর কুমার, তার স্ত্রী নিপু চন্দনা এবং হিমাংশু শেখর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ২৮ মে সকালে পূজার জন্য সুজিতের মা তাদের বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করলেও সাড়া না পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেন। পরে প্রতিবেশীরা তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিকেল ৩টা থেকে তাদের জ্ঞান ফিরতে শুরু করে।
মধু ঠাকুরের স্ত্রী জানান, তার কানে থাকা সোনার দুল ও হাতে থাকা দুটি বালা খোয়া গেছে। থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে বাড়ির প্রধান ফটকে তালা দেওয়া ছিল।
তদন্তে আরও জানা যায়, হিমাংশু শেখর রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক রনজিত ডাক্তার তার রক্তচাপ ১৮০/১৫০ পায় এবং উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এ ঘটনায় ধর্ষণ বা ডাকাতির কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, যা ভুক্তভোগীরাও স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে ওই পরিবারের আরেক সদস্য, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন এবং গুজবে কান না দিতে আহ্বান জানান। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু অসাধু ব্যক্তি ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ / মা.প্র/এ.জে