মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুস ছাড়া মিলছে না কোনো সেবা—এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় সেবাপ্রত্যাশীরা। জমির নামজারি, খতিয়ান দেখানো, তদন্ত প্রতিবেদন কিংবা খাজনা আদায়— প্রতিটি ধাপে টাকা না দিলে কাজ হয় না বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ভূমি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তহশিলদার কবির মিয়ার বিরুদ্ধে এসব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, কবির মিয়া নিজের নিয়ন্ত্রণে কয়েকজন দালাল রেখে সেবা প্রক্রিয়াকে পেছনে ঠেলে দিয়েছেন ঘুস বাণিজ্যের সামনে।
ভূমি অফিসের আশপাশেই রয়েছে দু’টি কম্পিউটারের দোকান। সেখান থেকেই ভূমি সংক্রান্ত অনলাইন আবেদন করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, দোকানদারদের অনেকেই সরাসরি তহশিলদারের হয়ে অর্থ আদায় করেন। এই দোকানের এক মালিক রফিক, তহশিলদারের নিজ এলাকার বাসিন্দা।
জমির তদন্তে দুইপক্ষের কাছ থেকেই টাকা নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। যে পক্ষ বেশি দেয়, তদন্ত রিপোর্ট তার পক্ষেই যায়। নামজারি করতে হলে ‘চুক্তিতে’ ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। কেউ চুক্তি না করলে তাকে দিনের পর দিন ঘুরতে হয় অফিসের বারান্দায়।
এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ লাল মিয়া হাওলাদার জানান, তার জমির নামজারির জন্য তহশিলদার ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি কষ্ট করে ৪ হাজার টাকা দিলে তা ফেরত না দিয়ে তাকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে টাকা ফেরত দিয়ে কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তহশিলদার।
এ বিষয়ে তহশিলদার কবির মিয়া বলেন, সব অফিসেই এমন লেনদেন হয়, আমিও করি।িঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এসব করি। এসব নিয়ে লিখে কী হবে!
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ-উল-আরেফিন বলেন, ‘আমি মৌখিক কিছু অভিযোগ পেয়েছি। তবে এখনো লিখিতভাবে কেউ অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে তদন্ত করে তহশিলদার কবির মিয়াকে অপসারণ এবং ভূমি অফিসকে ঘুসমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
একুশে সংবাদ / মা.প্র/এ.জে