পঞ্চগড়ে বিরল জন্মগত ত্রুটির (Congenital anomaly) কারণে এক নবজাতক ছেলে শিশু দুইটি মাথা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। জন্মের কিছুক্ষণ পরই অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে সিজারিয়ানের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। নবজাতকের শরীরে দুইটি হাত ও পা স্বাভাবিক থাকলেও মাথা ছিল দুটি।
দুই মাথা নিয়ে শিশুর জন্মের খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালের নবজাতক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সামনে উৎসুক জনতার ভিড় জমে। শিশুটিকে চিকিৎসা দেওয়ার পর দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে মারা যায়।
শিশুটির বাবা চা-শ্রমিক মাজেদুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বিয়ে হয়েছে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। এটি আমাদের প্রথম সন্তান। আলট্রাসনোগ্রামে বলা হয়েছিল দুইটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু জন্মের পর দেখি একটি শরীরে দুইটি মাথা।”
গর্ভবতী মা শুরভি আক্তারকে শনিবার (১০ মে) পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সোমবার (১২ মে) আলট্রাসনোগ্রাম করার পর চিকিৎসক দুটি সন্তান বলে জানালেও, পরদিন দেখা যায় এটি ছিল দ্বিমস্তকীয় (dicephalic) একটি শিশু — এক শরীরে দুটি মাথা।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আবু সায়েম জানান, “বাচ্চাটি ডেলিভারির নির্ধারিত সময় পার করে এসেছিল এবং মায়ের পেটে পানি কম ছিল। শিশুটি পেটে থাকাকালীন ময়লা (মেকোনিয়াম) ত্যাগ করেছে, যার ফলে শ্বাসকষ্ট বা রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস হয়েছিল।”
আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবুল কাশেম বলেন, “শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন ছিল। জন্মের পর তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়, কিন্তু দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে সে মারা যায়।”
নবজাতকটি পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের কাজিরহাট মহারাজার দিঘী গ্রামের বাসিন্দা চা-শ্রমিক মাজেদুল ইসলাম ও গৃহিণী শুরভি আক্তারের প্রথম সন্তান ছিল।
একুশে সংবাদ/প.প্র/এ.জে