AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে আলুর দাম বৃদ্ধি


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৬:৫৭ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০২৩
ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে আলুর দাম বৃদ্ধি

এ বছর আলুর মৌসুমের শুরুতে ১০টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণ হয় (৬৫ কেজি ওজনে) ১৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৮৩ বস্তা। সংরক্ষিত আলু উত্তোলনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত। এসব হিমাগারে চলতি জুলাই মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত ১০ লাখ ৩৩ হাজার বস্তা আলু এখনও মজুত রয়েছে। বর্তমান কৃষকের ঘরে কোনো আলু মজুদ নেই। তাই হিমাগার থেকে সীমিতভাবে সরবরাহ হওয়া আলু এখন বাজার পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় আলুর দাম বেড়েই চলেছে।

 

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার হিমাগারগুলোতে এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ী ও মজুতদাররা বেশী লাভের আশায় আলু বিক্রি করছেন না। পিঁয়াজ,কাঁচা মরিচ,আদা,রসুনের পর এবার আলুর দামের কারসাজিতে পড়েছেন সাধারন ক্রেতারা। এক মাস আগেও কালাইয়ের বিভিন্ন বাজারে অ্যাষ্টরিক, কার্ডিনাল ও ডায়মন্ড জাতের প্রতি কেজি আলুর খুচরা মূল্য ছিল ৩০ টাকা। সেই আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আবার ৪০ টাকা কেজির দেশি জাতের পাকড়ি (লাল গুটি) আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়।

 

খুচরা ফরিয়ারা বলছেন, আলু ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু বিক্রি না করায় বাজারের চাহিদা মত আলু মিলছে না। যার ফলে এক মাসের ব্যবধানে কালাইয়ের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলুতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

 

বর্তমানে হিমাগারে অ্যাস্টরিক,ডায়মন্ড ও কার্ডিনাল আলু প্রতি বস্তায় বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০ টাকায়। আর দেশি পাকড়ি জাতের আলু প্রতি বস্তায় বিক্রি হচ্ছে ২৩০০ টাকায়। অর্থাৎ সংরক্ষণের মাত্র চার/ছয় মাসের ব্যবধানে প্রতি বস্তা আলুতে ব্যবসায়ীদের লাভ টিকছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।

 

উপজেলার ভেরেন্ডি গ্রামের আলু ব্যবসায়ী মাহবুব হোসেন বলেন, এখন তিন চার দিনেও এক ট্রাক আলু ঢাকায় পাঠাতে পারছি না। চাহিদা থাকার পরেও আলু পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারের উর্দ্ধগতি দেখে হিমাগারে মজুদ করা আলু ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন না।

কালাই উপজেলার মোলামগাড়ী হাটের আলু ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বলেন, হিমাগারে আলু মজুদ করে বিগত তিন বছর লোকসান গুনতে হয়েছে। তখন আমাদের কেউ খোঁজও নিতে আসেননি। এবার আলুর দাম একটু বেশি হতেই সবাই চিৎকার শুরু করেছে। অথচ বাজারে অন্যান্য সবজির দাম কত বেশি। সেগুলো নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই।

 

কালাই উপজেলার পুনট হাটের আলু ব্যবসায়ী মিঠু ফকির জানান, এবার তিনি ৬০ কেজি ওজনের অ্যাস্টরিক,ডায়মন্ড,কার্ডিনাল ও লাল পাকরি জাতের ৬ হাজার ৬’শ বস্তা আলু স্থানীয় কয়েকটি হিমাগারে মজুত রেখেছেন। এর মধ্য ১ হাজার ৮’শ বস্তা আলু বিক্রি করেছেন। আরও ৪ হাজার ৮’শ বস্তা আলু মজুত আছে। দাম আরও বাড়বে বলে তিনি এই মহুর্তে আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।

কালাই পৌর এলাকার পাঁচশিরা বাজারের আলু ব্যবসায়ী বাবু মিয়া জানান, মৌসুমের শুরুতে তিনি ৩ হাজার বস্তা আলু হিমাগারে মজুত রেখেছেন। দুইদিন আগে ১৭৫০ টাকা দরে কার্ডিনাল জাতের ২৫০ বস্তা আলু বিক্রি করেছেন। এখনও ২ হাজার ৭৫০ বস্তা আলু মজুত রয়েছে। এখনও অনেক সময় রয়েছে। তাই আর এই মহুর্তে তিনি আলু বিক্রি করবেন না।

 

কালাই পৌর কাঁচা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী অশোক কুমার বলেন, এক মাস আগে অ্যাস্টরিক, ডায়মন্ড ও কার্ডিনাল জাত ৬০ কজি ওজনের এক বস্তা আলু ১৪২০ থেকে ১৪৩০ টাকায় ক্রয় করেছি। তাতে কেজি প্রতি ২৩.৫০ টাকা পড়েছে। পরিবহন খরচ,পঁচে যাওয়া ও শুকিয়ে কমে যাওয়াতে আরও দেড় থেকে ২ টাকা পড়ে যায়। সবমিলে খুচরা বাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করা হয়েছে। তাতে ৪ থেকে ৫ টাকা কেজি প্রতি লাভও টিকেছে। 

 

বর্তমান সেই এক বস্তা আলু ক্রয় করতে হচ্ছে ১৭৫০ থেকে ১৮০০ টাকায়। তাতে এক কেজি আলু ৩০ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ, পঁচে যাওয়া ও শুকিয়ে কমে যাওয়ার বিষয়টি রয়েই গেছে। হিমাগারে পর্যাপ্ত পরিমানে আলু মজুত রয়েছে। তারপরও পাইকারী বাজারে আলু পাওয়া যাচ্ছে না। আবার বস্তা প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশী দিলেই আলু পাওয়া যায়। আগে যে পরিমান লাভ টিকেছে দাম বাড়ার পরেও সেই পরিমানই লাভ টিকছে। এতে করে আমরা খুচরা বিক্রেতারা লাভবান না হলে কি হবে, মজুতদাররা ঠিকই লাভবান হচ্ছেন।

 

মোলামগাড়ি নর্থপোল কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপক মনোয়ার হাসেন বলেন, উপজেলার অধিকাংশ হিমাগারেই কৃষকের চেয়ে ব্যবসায়ীরাই আলু মজুদ করেন বেশী। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। বিগত তিন বছর আলুতে লোকসান হয়েছে। এবার বাজার ভালো হওয়ায় ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার প্রত্যাশা করছেন। তাই এই মুহুর্তে ব্যবসায়ীরা কেউ আলু বিক্রি করছেন না। প্রতিদিন ধীর গতিতে আলু হিমাগার থেকে বিক্রি হচ্ছে।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ কুমার রায় বলেন, উপজেলার ১০টি হিমাগার ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণর পর গত কয়েক মাসে প্রায় ৪০ হাজার মট্রিক টন আলু বিক্রি হয়েছে। এখনও অনেক আলুর মজুদ আছে। সেই হিসাবে আলুর দাম এভাবে বেশি হওয়ার কথা নয়। আমরা বাজার মনিটরিং করছি। ব্যবসায়ীরা যদি সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

একুশে সংবাদ/সা.খ.প্র/জাহা

Link copied!