ঈদুল আজহার আগে শেষ শুক্রবার (৬ জুন) রাজধানীর গাবতলী হাটে দেখা দিয়েছে কোরবানির গরুর সংকট। সকাল থেকেই ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। নির্ধারিত জায়গাগুলো সকালেই খালি হয়ে গেছে, ফলে অনেক ক্রেতা কাঙ্ক্ষিত গরু না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন।
গাবতলীতে সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই গরু কিনতে এসেছেন। তবে ১ থেকে ২ লাখ টাকার গরুর চাহিদা বেশি থাকলেও সেই দামে ভালো পশু পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকেই বলছেন, “এখন আর সময় নেই, পছন্দ হলেই দামে কিছুটা ছাড় দিয়ে কিনে নিচ্ছি।”
বিক্রেতারা বলছেন, ছোট ও মাঝারি গরু বিক্রি হয়ে গেছে সকালেই। নতুন করে গরু না এলে বিকেল নাগাদ হাটে তেমন কিছু থাকবে না। ক্রেতাদের চাপে দরদাম করার সুযোগও কমে আসছে।
বড় গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ কম। ৬ লাখ বা তার বেশি দামের গরুর দিকে কেউ ফিরেও তাকাচ্ছেন না। বিক্রেতারা বলছেন, “এমন দামে বিক্রি করলে লোকসান হবে। তাই শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করছি।”

অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, “বড় গরু দেখার মতো সময়, জায়গা বা বাজেট কোনোটাই এখন আর নেই। ছোট-মাঝারি গরু কিনেই চলে যাচ্ছি।”
যারা গরু কিনতে পারছেন না, তারা দাম নিয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ বলছেন, “একটু কমান, হাতে নগদ টাকা আছে।” আর কেউ বিক্রেতার দড়ি টেনে দেখছেন শেষ পর্যন্ত কিছু ছাড় মেলে কি না।
বিক্রেতাদের কেউ কেউ এখনও বলছেন, “আরও কিছুক্ষণ থাকি, দাম বাড়তে পারে।” তবে চাহিদা বেশি থাকায় অনেকেই আপস করে কিনে নিচ্ছেন।
চাহিদার এই চাপে সামাল দিতে আজও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নতুন গরু গাবতলীতে ঢুকছে। তবে যেভাবে ছোট ও মাঝারি গরু মুহূর্তেই শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাতে বিক্রেতারাও বলছেন, “চাহিদা মেটাতে না পারলে অনেকেই হয়তো শেষ সময়ে হাট থেকে খালি হাতেই ফিরবেন।”
গাবতলী হাটে এখন চলছে ক্রেতা-বিক্রেতার নীরব লড়াই। সময় কম, গরু কম—এই বাস্তবতায় দরদাম, দ্বিধা, সিদ্ধান্ত—সব কিছু মিলিয়ে হাটে রয়েছে চাপা উত্তেজনা। পশু না পেলে ঈদের আনন্দই ফিকে হয়ে যাবে—এই ভয়ে অনেকেই আজই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে কিনে ফেলছেন পছন্দের গরু। তবে যাদের ভাগ্যে এখনও জুটেনি, তাদের জন্য বিকেলের দিকে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
একুশে সংবাদ/ স.ট/এ.জে