জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাহরিন ইসলাম খানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে মানহানির মামলা করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে সিরাজগঞ্জ সদর থানার আমলি আদালতে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
জানা যায়, গত ২৫ অক্টোবর গাজী টিভির ‘রেইনবো নেশন বনাম ধর্মীয় কার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সঞ্চালক কাজী জেসিনের উপস্থিতিতে ড. নাহরিন ইসলাম খান বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারিকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দেন। তিনি দাবি করেন, জামায়াতের সিরাজগঞ্জ শাখার সেক্রেটারি গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে গেলে তাদের স্ত্রীদের সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন। এতে ইঙ্গিত দেওয়া হয় যে ‘জামায়াতের লোকেরা নারীলোভী’। পরে উক্ত ভিডিও ক্লিপটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
তবে বিবিসি বাংলার সেই সাক্ষাৎকার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জামায়াত নেতা বলেছিলেন— “৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন, কিন্তু আমাদের দ্বারা কেউ হয়রানির শিকার হননি। আমাদের ধারণা, আওয়ামী লীগের সাধারণ ও সমর্থক ভোটারদের ভোট আমাদের দিকে আসবে।”
এ বিষয়ে অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, “এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কুরুচিপূর্ণ। যা আমার ব্যক্তিগত মর্যাদা এবং জামায়াতে ইসলামীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। আমি কখনও এ ধরনের বক্তব্য দিইনি। এটি মিথ্যা প্রচার, যা জনগণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।”
অন্যদিকে অধ্যাপক ড. নাহরিন ইসলাম খান বলেন, “যে বক্তব্যটি আমি উদ্ধৃত করেছিলাম, সেটি তখন দুই সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছিল। তখন কেউ আপত্তি তোলেনি। কিন্তু এখন তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কোনো তথ্য যখন সংবাদমাধ্যমে আসে, সেটির সত্যতা যাচাই করার দায়িত্ব সরকারের, পাঠকের নয়। কারণ সাধারণ পাঠক জানেন না কোনটি মিসইনফরমেশন আর কোনটি ডিজইনফরমেশন। এটি একটি টক শো ছিল, যেখানে মির্জা গালিবও উপস্থিত ছিলেন। তিনি তখন কিছু বলেননি, পরে ফেসবুকে ক্ষমা চাওয়ার পোস্ট দিয়েছেন। যদি মামলা করতেই হয়, তবে যেখান থেকে তথ্যটি ছড়িয়েছে— সেই প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধেই করা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “জাকসু নির্বাচনে আমার ভূমিকা ছিল, যেখানে আরও দুইজন শিক্ষক ছিলেন। তাঁদেরকেও বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছিল। আমি মনে করি, এটি আমার বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত একটি পদক্ষেপ।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

