সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো সারদীয় দুর্গাপূজা। এই দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য বছরের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত আনন্দের উৎসব। এই উৎসব এক বছর প্রতীক্ষার পর কোটি ভক্তের মনে আনন্দের উচ্ছ্বাস বয়ে আনে। দুর্গাপূজার এই ক`টি দিন যেন ডুবে থাকে ভক্তদের ভক্তি, মিলন ও উৎসবের রঙ্গে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহর ও গ্রামের বিভিন্ন মণ্ডপে ভিড় করেন নানা বয়সী সনাতন ধর্মালম্বীরা। এদের মাঝে দেখা যায় সনাতন ধর্মালম্বী বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের। ঢাকঢোল পিটিয়ে তারাও যেন আনন্দে মেতে উঠে।
পড়াশোনার ব্যস্ততা ভুলে আনন্দের এই সময়টুকুতে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন কবি নজরুল কলেজের সনাতন ধর্মাবলম্বীর বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা। পূজার ছুটিতে পরিবার আত্মীয়-স্বজন ও শৈশবের বন্ধুদের সাথে আনন্দ উচ্ছ্বাস ভাগাভাগি করার জন্য অনেকেই ফিরে গেছেন গ্রামে কিংবা কেউ কেউ শহরে রয়ে গেছেন ।

হিন্দু ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীরা মনে করেন দুর্গাপূজা কেবল একটি ধর্মীয় আচরণ নয় বরং এটি সংস্কৃতি ও সামাজিক সম্প্রীতির এক বিশাল আয়োজন। যার ফলে এই উৎসবকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের আনন্দের শেষ নেই।
কবি নজরুল কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুস্মিতা সুস্মি বলেন, আগের বছর দুর্গাপূজা আমরা ভালোভাবে উপভোগ করতে পারেনি। আগের বছর আমাদের মধ্যে একটু ভয় কাজ করতো ,কারণ দশমীর সময় বিসর্জন দিতে গিয়ে
আমরা হামলা শিকার হয়েছি। এছাড়াও অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে। তবে এ বছরে দুর্গাপূজায় সবদিক দিয়ে নিরাপত্তা পেয়েছি, প্রশাসনিক সাহায্য পেয়েছি। এ বছর সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিমার বিসর্জন দেওয়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে। যার ফলে গত বছরে তুলনায় এ বছর খুব তাড়াতাড়ি বিসর্জন দিতে হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এ বছর শান্তি-শৃংঙ্খলভাবে আমরা আমাদের উৎসব পালন করতে পেরেছি। তবে এ বছর বিসর্জনের সময়টুকু বাড়ালে ভালো হতো বলে আমি মনে করি। নিজ পরিবারের সাথে এই আনন্দের সময়টুকু উপভোগ করতে পেরে অনেক খুশি।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রচনা দাস বলেন, আগের বছরের তুলনায় এ বছর আমি অনেক আনন্দ উপভোগ করেছি কারণ এ বছর আমি নতুন বিবাহ করেছি যার কারণে নতুন একটা পরিবার পেয়েছি আর এই নতুন পরিবারের সাথে আনন্দ উপভোগ করাও একটা আনন্দ। সপ্তমী থেকে শুরু করে দশমী পর্যন্ত নিজের পরিবার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে নিজের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিয়েছি। তবে দশমীর দিন দূর্গা মার বিদায়ের কারণে একটু বিষাদময় অনুভব করছিলাম। এই দিনে সিঁদুর খেলা ও বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গা মায়ের বিদায় হয় এবং পূজার সমাপ্তি হয়।
দর্শন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী লোকনাথ ঘোষ বলেন, এক বছর পর আমরা এই পূজা পালন করে থাকি। তাই আমাদের কাছে মা দুর্গার আগমন ভিষণ আনন্দের। গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক আনন্দ উপভোগ করেছি। নিজ পরিবার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের সাথে এই সময়টুকু কাটাতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। এবারের উৎসব মূলত অন্ধকারকে দূর করে আলো ও শুভ শক্তির আগমন বয়ে আনে।
একুশে সংবাদ/এ.জে