ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন ফুটবল খেলায় সংগঠিত মারামারির ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার করে বিভাগটি শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচী করেন তারা। এসময় বিভাগটির বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘গণমাধ্যম রুখে দাঁড়াক, নির্যাতনের প্রতিবাদ হোক’, ‘সাংবাদিকের উপর হামলা মানেই গণতন্ত্রের কবর’, ‘সাংবাদিকের কন্ঠরোধ, চলবে না চলবে না’, ‘সাংবাদিকের কন্ঠরোধ, মানিনা মানবো না’, ‘যতই করো হামলা, কলম থামবে না’সহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, সংবাদ সংগ্রহের জন্য একজন সাংবাদিককে যেভাবে ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটবে তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একজন সাংবাদিকের প্রথম কাজ হয় যেকোন ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ডকুমেন্টস সংগ্রহ করা। তারপর সে সেটা যাচাই করে নিউজ হবে কিনা। ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে গিয়ে যদি এরকম হামলার শিকার হতে হয় তাহলে সাংবাদিকরা কাজ করবে কীভাবে?
কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন অমিন্তা বলেন, সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়, এটি মুক্ত পেশা। সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হয়ে যদি সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মার খেতে হয় তাহলে এর থেকে লজ্জ্বাজনক বিষয় আর হতে পারেনা। যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মাহিমা হিমা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আমাদের বিভাগের বড় ভাইয়ের উপর হামলা হয়েছে। সাংবাদিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার তথ্য সংগ্রহ করা। এই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে যদি মার খেতে হয় তা কখনোই কাম্য নয়। আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি যাতে পরবর্তীতে আর কেউ এধরনের কাজ করার সাহস না দেখায়।
এছাড়াও এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মায়িশা মালিহা চৌধুরী, সাদিয়া আফরিন অমিন্তা, ফারহানা ইয়াসমিন, ওয়াসিফ আল আবরার, মানিক হোসেন, আবু বকর, সুবংকর রায়, মোহাম্মদ সাদ ও আবু সালমান সহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, আন্তঃসেশন খেলাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ভিডিও করতে গেলে তিন সাংবাদিকদের মারধর করেছে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও এক সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। শনিবার (১২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ লেখা পর্যন্ত মোবাইল ফেরত দেননি তারা। আহত সাংবাদিকরা হলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিফ বিল্লাহ (দৈনিক আমাদের বার্তা) একই বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল আলম (দৈনিক আজকালের খবর) এবং একই শিক্ষাবর্ষের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নুর ই আলম (বার্তা২৪)। অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন— অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ হাসান, সাব্বির, আফসানা পারভিন টিনা, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত, রিয়াজ মোর্শেদ, সৌরভ সোহাগ ও পান্না। একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অজিল, সাইফুল, রাকিব, মশিউর রহমান রিয়ন ও হৃদয়সহ অন্তত ২০-২৫ জন।
একুশে সংবাদ/এ.জে