কথার অবাধ্য হলে মার্কস কম দেওয়া, অশ্লীল গালিগালাজ, যৌন হয়রানি ও ছাত্রদের সমকামিতায় বাধ্য করাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। হাফিজুল ইসলাম নামের ওই শিক্ষক ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৩১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৮তম সিন্ডিকেটর ০৭ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক তদন্তের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও শৃঙ্খলার স্বার্থে ওই শিক্ষকের এহেন কর্মকাণ্ড ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির চরম পরিপন্থি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৪(১) (চ) ধারা মোতাবেক তাকে ৩১ মে থেকে চাকরি হতে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৭ অক্টোবর হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে সমকামিতা, যৌন হয়রানী, শিক্ষার্থী হেনস্তা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফল খারাপ করে দেওয়া ও ছাত্রলীগের মিছিলে যেতে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা। এজন্য তার অব্যাহতির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে উপাচার্যের কাছে তারা লিখিতভাবে ২৭ দফা অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পায়। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৬তম সাধারণ সভায় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির (৪) ১ (খ) ও (ঙ) ধারা মোতাবেক তার বার্ষিক একটি ইনক্রিমেন্ট বাতিলসহ এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।
তবে গত ২৮ জানুয়ারি বিভাগটির শিক্ষার্থীরা হাফিজের এই শাস্তি প্রত্যাখান করে তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে। আন্দোলনের মুখে প্রশাসন শাস্তি পর্যালোচনার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৭ তম সভায় বিষয়টি পুনরায় ব্যাপক তদন্তের জন্য এক সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকেই গত ৩১মে সর্বশেষ সিন্ডিকেটে তাকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি কল ধরেননি।
একুশে সংবাদ/এ.জে