৮০৭ দিন এবং টানা ৮৩ ইনিংস সেঞ্চুরিবঞ্চিত থাকার পর অবশেষে শতকের দেখা পেলেন পাকিস্তানের তারকা ব্যাটার বাবর আজম। কাকতালীয়ভাবে বিরাট কোহলিও তার ক্যারিয়ারে ঠিক ৮৩ ইনিংস সেঞ্চুরি পাননি। দুজনেরই মুক্তির সংখ্যা তাই ৮৪—যা যেন নতুন করে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ এনে দিল। বাবরের সেই প্রতীক্ষিত সেঞ্চুরির দিনে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতেছে পাকিস্তান।
ইসলামাবাদে ভয়াবহ বোমা হামলার পর নিরাপত্তা শঙ্কায় ম্যাচটি একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকজন লঙ্কান ক্রিকেটার দেশে ফিরতে চাইলেও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আশ্বাসে খেলা চালিয়ে যেতে সম্মত হয় শ্রীলঙ্কা। পরে রাওয়ালপিন্ডিতে আগে ব্যাট করে চারিথ আসালাঙ্কার দল তোলে ৮ উইকেটে ২৮৮ রান, যা ১০ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে সহজে পেরিয়ে যায় পাকিস্তান।
ভালো সূচনার পর ৫১ রানে প্রথম ধাক্কা খায় লঙ্কানরা। পাথুম নিশাঙ্কা (২৪) রানআউট হন, শিগগিরই ফেরেন আরেক ওপেনার কামিল মিশারা (২৭)। কুশল মেন্ডিস (২০) ও অধিনায়ক আসালাঙ্কা (৬) ব্যর্থ হওয়ায় চাপ বাড়ে। ৯৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর সাদিরা সামারাবিক্রমা ও জানিথ লিয়ানাগে ৬১ রানের জুটি গড়ে দলকে ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে সামারাবিক্রমা ৪২ রানে ফিরলে আবারও ব্যাঘাত ঘটে।
এরপর লিয়ানাগে (৫৪)–কামিন্দু মেন্ডিস (৪৪) জুটি দলকে নেয় বড় সংগ্রহের পথে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ৩৭ রানের ইনিংস শেষে লঙ্কানদের স্কোর দাঁড়ায় ২৮৮। পাকিস্তানের পক্ষে আবরার আহমেদ ও হারিস রউফ ৩টি করে উইকেট নেন। অসুস্থতার কারণে উপস্থিত ছিলেন না অধিনায়ক শাহিন আফ্রিদি।
জয়ের লক্ষ্য তাড়ায় ঝোড়ো শুরু করে পাকিস্তান। ৩৩ রানে সাইম আইয়ুব ফিরলেও ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি দলকে সুবিধাজনক অবস্থান দেয়। এরপর ফখর জামান ও বাবর ১০০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ম্যাচ থেকে লঙ্কানদের ছিটকে দেন। ফখর ৯৩ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় খেলেন ৭৮ রানের ইনিংস।
শেষ পর্যন্ত বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ১১২ রানের অপরাজিত জুটি দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ে। রিজওয়ান ৫৪ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ৫১ করেন।
১১৯ বলের ক্লাসিক ইনিংসে ১০২ রান করেন বাবর—যা তার ২০তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। এতে তিনি পাকিস্তানের কিংবদন্তি সাঈদ আনোয়ারের পাশে বসলেন যৌথভাবে সর্বোচ্চ ওয়ানডে সেঞ্চুরির তালিকায়। দেশের মাটিতে এটিই তার ৮ম সেঞ্চুরি—পাকিস্তানি ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
দ্রুততম ২০ ওয়ানডে সেঞ্চুরি করার তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন বাবর—হাশিম আমলা: ১০৮ ইনিংস, বিরাট কোহলি: ১৩৩ ইনিংস, বাবর আজম: ১৩৬ ইনিংস ।
৮৩ ইনিংসের সেঞ্চুরিখরা ভাঙতেই সিরিজও হাতে পাক—দ্বিগুণ আনন্দে ভাসছে পাকিস্তান শিবির।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

