বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানযোগে আজ বিকেল ৩টার দিকে দেশে ফিরে আসতে পারে, এমন খবর দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক বার্তায় জানিয়েছে, নেপাল সফর শেষে দলটি আনুমানিক বিকেল ৩টার দিকে দেশে পৌঁছানোর কথা। এছাড়া বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানটি আজ সকাল ১১টা ৫৩ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে।
নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা গত কয়েকদিন ধরে তীব্র আকার নিয়েছে। সোমবার থেকে নেপাল সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে হাজার হাজার তরুণ ও যুবক বিক্ষোভে নামেন। পুলিশের গুলি চালানোর ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার সরকারি ভবনে হামলার ঘটনার পর সহিংসতা বৃদ্ধি পায়।
এই সহিংসতার পর প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল তাকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করার দায়িত্ব দেন। তবে ওলি সরকারি বাসভবন ত্যাগ করার পর তার অবস্থান এখনও অনিশ্চিত। আন্দোলনের প্রতিনিধিরা সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আনার প্রস্তাব সেনা কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন।
সুশীলা কার্কি ২০১৬-২০১৭ সালে নেপালের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন এই পদে দায়িত্ব নেওয়া একমাত্র নারী এবং তখন থেকে জনগণের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন। তবে সেনা সদর দপ্তরের বাইরে কিছু আন্দোলনকারী তার প্রার্থিতার বিরোধিতা করেছেন।
সেনারা বুধবার কাঠমান্ডুর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নজরদারি চালিয়েছে। একই সঙ্গে যানবাহন ও মানুষ তল্লাশি করা হয়েছে এবং সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলেও সেনারা প্রথমে ব্যারাকেই অবস্থান নিয়েছিল। তবে মঙ্গলবার রাতে সেনা মোতায়েন শুরু হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
শহরের প্রধান কারাগারেও সেনারা কোন্দল দমন কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। কয়েদিরা প্রহরীদের হারিয়ে আগুন ধরিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে সেনারা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পালানোদের আটক করে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এই আন্দোলন মূলত ‘জেনারেশন জি’ বিক্ষোভ নামে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর আন্দোলন শুরু হয়। যদিও মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়, তবু পুলিশি গুলিতে ১৯ জন নিহত হওয়ায় বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। আন্দোলনকারীরা সাধারণ যুবকদের কর্মসংস্থানের সংকট এবং রাজনৈতিক নেতাদের সন্তানদের বিলাসী জীবন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।
বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নেপালে যুবকদের বেকারত্বের হার প্রায় ২০ শতাংশ। সরকারি তথ্য মতে, প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি যুবক জীবিকা অর্জনের উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছেন।
একুশে সংবাদ/এ.জে