২০০ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১২ বল যেতে না যেতেই পঞ্চম উইকেটে নামা কেএল রাহুল নিজেকে ক্রিজে দেখতে পান। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাইয়ের প্রচন্ড গরমে প্রায় ৫০ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে হয়েছে রাহুলকে। ম্যাচ শেষের তিন ঘন্টা পর রাহুল বলেছেন, একটু আগে ভাগেই ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছিল।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেরনে ম্যাচ সেরা রাহুলকে নিয়ে আগ্রহের কমতি ছিলনা উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের। বিশেষ করে বিরাট কোহলির সাথে ১৬৫ রানের পার্টনারশীপে মূলত দুজনের মধ্যে কি ধরনের আলোচনা চলছিল সেটাই জানতে চেয়েছে সাংবাদিকরা। একটু হাসি দিয়ে রাহুল এসময় বলেন, ‘সত্যি বলতে কি খুব বেশী কোন কথা হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের পর আমি মাত্রই কিছুটা স্বস্তি নিয়ে প্যাভিলিয়নে বসে ছিলাম। ধারনা করেছিলাম কিছুটা বিশ্রাম পাবো। কিন্তু সেজন্য কোন সময় পাইনি। সে কারনে ক্রিজে এসে কিছুটা স্বস্তি নিতে চেয়েছিলাম।’
এ সময় রাহুল আরো বলেন কোহলি তাকে বলেছিলেন ওয়ানডেতে মাঝে মাঝে টেস্টের মত ব্যাটিং করতে হয়। বিশেষ করে রোহিত শর্মা, ইশান কিশান শ্রেয়াস আইয়ার প্রত্যেকেই শুন্য রানে ফিরে যাবার পর লো স্কোরিং ম্যাচে বেশ চাপে পড়ে ভারত।
রাহুল বলেন, ‘বিরাট আমাকে বলেছিল এই মুহূর্তে উইকেট থেকে আমরা অনেক সহায়তায় পাবো। আমাদের শুধুমাত্র সঠিক শটটি বেছে নিতে হবে। একইসাথে টেস্ট ক্রিকেটের মত মাঝে মাঝে খেলতে হবে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়। এটাই আমাদের মূল পরিকল্পনা ছিল। দলের জন্য কিছু করতে পেরে, এজন্য আমরা খুশী।’
ঐ সময় ব্যাটিং করাটা কতটা কঠিন ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেছেন, ‘জটিল, তখনো সেখানে সামান্য কুয়াশা ছিল, যা ফাস্ট বোলারদের নতুন বলে সহায়তা করছিল। এরপর স্পিনাররা এসেও উইকেট থেকে সহায়তায় পেয়েছে। তবে ইনিংসের শেষ ১৫-২০ ওভার কুয়াশা ব্যাটারদের সহযোগিতা করেছে। একসময় অস্ট্রেলিয়া বলও পরিবর্তন করে। কিন্তু তখন আমরা বেশী সুবিধা পেয়েছি। এখনো আমি বলবো এই উইকেট মোটেই ব্যাটিং সহায়ক নয়। তবে আবার ব্যাটারদের জন্য খুব বেশী কঠিনও নয়। এটা মোটেই ফ্ল্যাট উইকেট নয়। আজকের ম্যাচে জিততে পেরে আমরা সত্যিই খুশী।’
ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা স্বীকার করেছেন ভারত যখন ২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তখন তিনি কিছুটা নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলেন। এই প্রথমবারের মত ওয়ানডে ক্রিকেটে তাদের টপ অর্ডারের তিনজন ব্যাটার শুন্য রানে আউট হয়েছে। এভাবে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে কোন দল ওয়ানডেতে জিততে পেরেছে কিনা তা রোহিতের জানা নেই।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এই ধরনের টার্গেট তাড়া করতে নেমে এভাবে ইনিংসের শুরু কারোরই কাম্য নয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান বোলারের কৃতিত্ব দিতেই হয়। তারা দারুন বোলিং করেছে। ভারতেও কিছু লুজ শট খেলেছে। কিন্তু এটা হতেই পারে। এই টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সকলেরই লক্ষ্য থাকে যত দ্রæত সম্ভব ইনিংস শেষ করা। বিশেষ করে পাওয়ার প্লে’র সুবিধা সবাই কাজে লাগাতে চায়। কিন্তু সব কৃতিত্ব বিরাট ও রাহুলের। মিডল অর্ডারে তারা যেভাবে উইকেটে টিকে থেকে ম্যাচ জয়ী পার্টনারশীপ গড়েছে তাতে তাদের প্রশংসা করতেই হয়।’
ভারতের পরবর্তী ম্যাচ দিল্লিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এই মঠেই শ্রীলংকার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারতে ১০টি ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যু সফর করতে হবে। রাউন্ড রবিন পর্বে একমাত্র দেশ হিসেবে ভারত কোন এক ভেন্যুতে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছেনা। এ সম্পর্কে রোহিত বলেন, ‘এটা আমাদের দলের জন্য অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। ভিন্ন কন্ডিশনে ভিন্ন উইকেটে আমাদের ম্যাচগুলো খেলতে হচ্ছে। সে কারনেই একেক ম্যাচের কম্বিনেশনও পরিবর্তন করতে হচ্ছে। কিন্তু একটি দল হিসেবে আমরা সবকিছুর জন্য প্রস্তুত। যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন তার সাথে মানিয়ে নেবার জন্য আমরা প্রস্তুত ।’
একুশে সংবাদ/স ক



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

