দক্ষিন আফ্রিকান তারকা আইডেন মার্করামের বিশ্বাস এই বিশ্বকাপেই ভেঙ্গে যেতে পারে নিজের রেকর্ড ব্রেকিং সেঞ্চুরি। সেই সঙ্গে তার দলের গড়া টুর্নামেন্টে সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রেকর্ডটি ভেঙ্গে যেতে পারে চলতি আসর শেষ হবার আগেই।
গতকাল অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নিজেদের ওপেনিং ম্যাচে মার্করামের ৪৯ বলে করা সেঞ্চুরিতে ভর করে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৪২৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় প্রোটিয়ারা। ম্যাচে ১০২ রানে জয় পায় দক্ষিন আফ্রিকা। ১০৬ রান করা ২৯ বছর বয়সি মার্করাম তার বিধ্বংসি ব্যাটিং দিয়ে ভেঙ্গে দেয় বিশ্বকাপ আসরে অতীতের দ্রæততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ২০১১ সালে বেঙ্গালুরুতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের কেবিন ও’ব্রায়ানের ৫০ বলের সেঞ্চুরিটিই ছিল এর আগে দ্রুততম সেঞ্চুরি।
গতকালের ম্যাচে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ দলগত রানের রেকর্ডটিও ভেঙ্গে দেয় দক্ষিন আফ্রিকা। এর আগে ওয়ানডে বিশ^কাপে ২০১৫ আসরে পার্থে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার করা ৪১৭ রান ছিল সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। কিন্তু ওই রেকর্ড ভেঙ্গে প্রোটিয়াদের করা ৫ উইকেটে ৪২৮ রান এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের সর্বোচ্চ সংগ্রহের তালিকার নবম স্থানে জায়গা পেয়েছে।
১৪টি চার ও তিনটি ছয় হাকিয়ে অসাধারণ এক ইনিংস খেলা মার্করাম ম্যাচ শেষে বলেন,‘ বর্তমান সময়ে ব্যাটাররা যেভাবে খেলছে, তাতে এই রেকর্ড চলতি আসরে ভেঙ্গে গেলে অবাক হবার কিছু থাকবে না। এখন এক ধরনের ‘বল দেখ-মার ’- এর মানষিকতা তৈরী হয়েছে । আজ রাতে এমন একটি উইকেট পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ।’
শনিবার মার্করামের প্রথম ৫০ রান এসেছে ৩৪ বল থেকে। পরের ৫০ রান তুলতে তিনি খরচ করেছেন আর মাত্র ১৫ বল। ওই ম্যাচে প্রেটিয়াদের হয়ে আরো দুটি সেঞ্চুরি করেন রাসি ভ্যান ডার ডুসেন (১০৮) ও কুইন্টন ডি কক (১০০)। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোন ইনিংসে একই দলের তিনটি সেঞ্চুরির রেকর্ড হলো।
ক্যারিয়ারে তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি হাকানো মার্করাম আরো বলেন,‘ দলগতভাবে একই গতিতে যেতে পারাটাও ছিল আমাদের জন্য দারুন একটি বিষয়। দারুন একটি মঞ্চ তৈরি করে দেয়ার জন্য আমার মনে হয় রাসি ও কুইনিকে (কুইন্টন ডি কক) কৃতিত্ব দেয়া উচিৎ।
আমার মনে হয়, এই আসরে নিজেদের সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে নেবার জন্য দলের মধ্যে আমাদের বাড়তি আবেগ বিরাজ করছে এবং তারা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলছে। সবাই জানে আমাদের শুরুটা হয় কিছুটা ধীরে।’
জবাবে বিশাল রানকে তড়া করে শ্রীলংকা যে ব্যাটিং দৃঢ়তা দেখিয়েছে তাতে তাদেরর কৃতিত্ব দেয়া উচিৎ। ৩২৬ রান সংগ্রহ করা লংকানদের হয়ে চমৎকার তিনটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন সহ-অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস (৭৬),চারিথ আসালাঙ্কা (৭৯) ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা (৬৮)।
মাত্র ১৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান করে শ্রীলংকাও শুরুতে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছে। অধিনায়ক শানাকা বলেন,‘ একটি হাই স্কোরিং ম্যাচ হবে বলেই আমি ধারনা করেছিলাম। রাসি , কুইনি ও মার্করাম সেঞ্চুরি পেয়েছেন। কিন্তু আমরা ধারাবাহিকতা রাখতে পারিনি। পরের ম্যাচে ভুলগুলো শুধরে নেবার চেস্টা করবো।’
আমাদের ধারনা ছিল তাদের ৩৫০ থেকে ৩৭০ রানে আটকে রাখতে পারব। ভেবেছিলাম আসালাঙ্কা ও মেন্ডিস তাদের দক্ষতা দেখিয়ে সেটি করতে পারবে। কিন্তু বাড়তি রান সামাল দিতে পারিনি আমরা। তিনজন বেলারকে রেখে সবকিছু সামাল দেয়া কঠিন। তবে এটি খেলারই একটি অংশ। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে আমি খুশি। প্রথম দশ ওভারের বল বেশ ভালো ছিল। পরের ম্যাচে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে।’
আগামী মঙ্গলবার হায়দ্রাবাদে পাকিস্তানের মোকাবেলা করবে শ্রীলংকা। বৃহস্পতিবার লখউনে ৫ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে দক্ষিন আফ্রিকা।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :