শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার ও সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গেট ভেঙে ও দেয়াল টপকে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। সেখানে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা বাধা দিলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে শতাধিক শিক্ষার্থী সামনে পড়া গাড়ি ও বিভিন্ন দপ্তরের জানালায় ভাঙচুর চালায়। এলজিআরডি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
লাঠিচার্জে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীও রয়েছেন।
এর আগে দুপুরের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের সামনে হাজির হন শিক্ষার্থীরা। ১ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নিলে সচিবালয়ে প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়, যার প্রভাবে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ ফাইটার জেট বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। নিহতের সংখ্যা ৩১ জনে পৌঁছেছে এবং আহত দেড় শতাধিক। আহতদের মধ্যে ৭০ জনেরও বেশি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এরই মধ্যে মঙ্গলবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাতে পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা আসায় অনেক পরীক্ষার্থী বিভ্রান্ত হয়ে আজ কেন্দ্রে চলে যায়। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ সিদ্ধান্ত আরও আগে জানানো উচিত ছিল।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরারের পদত্যাগ দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে মাইলস্টোন শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি পূরণের বিষয়টিও তারা আবারও তুলে ধরেন।
এর আগে সকাল ১০টা থেকেই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গোলচত্বরে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন। বিমান দুর্ঘটনায় সহপাঠীদের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা।
‘বিচার চাই না, সন্তানের লাশ চাই’, ‘সঠিক লাশের হিসাব চাই’—এমন নানা প্ল্যাকার্ড হাতে শিক্ষার্থীরা রাস্তার ওপর বসে অবস্থান নেন।
তাদের দাবির মধ্যে ছিল— নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও পরিচয় প্রকাশ, আহতদের সঠিক তথ্য প্রকাশ, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা, ক্ষতিপূরণ প্রদান, ঝুঁকিপূর্ণ বিমান বাতিল, প্রশিক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার।
একুশে সংবাদ/স.ট/এ.জে