সরকারি চাকরিজীবীদের চারটি নির্দিষ্ট কর্মকাণ্ডকে ‘অসদাচরণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে শাস্তির বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। ২৫ মে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর এটি কার্যকর করা হয়।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারী অনানুগত্য সৃষ্টি করে এমন কর্মকাণ্ডে যুক্ত হলে, ছুটি বা যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কাজে অনুপস্থিত থাকলে, অন্য কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিতে প্ররোচনা দিলে কিংবা অন্য কাউকে বাধাগ্রস্ত করলে — তাকে চাকরি থেকে অপসারণ, বরখাস্ত কিংবা নিম্নপদে নামিয়ে দেওয়ার মতো শাস্তি দেওয়া যাবে। এছাড়া অভিযোগের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং তার ভিত্তিতে সাত কর্মদিবসের মধ্যে দণ্ড আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। আপিল করা গেলেও রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ নেই, তবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যাবে।
এই অধ্যাদেশ ঘিরে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা অধ্যাদেশকে “নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন” বলে দাবি করে প্রত্যাহারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ’-এর ব্যানারে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, প্রায় সাড়ে চার দশক আগের সামরিক যুগের ধারাগুলো নতুনভাবে সংযোজন করে কর্মচারীদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। তারা বলছেন, দমনমূলক আইন করে আন্দোলন থামানো যাবে না এবং তারা অধ্যাদেশ পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন।
সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা আনতেই এই অধ্যাদেশ আনা হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও, সচিবালয়ের বিক্ষোভের ঢেউ ক্রমেই বাড়ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট মহলে উদ্বেগও দেখা দিয়েছে।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে