সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বিদেশগমন ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই মুখ খুলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন তিনি।
তিনি জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় দায়েরকৃত একটি হত্যা মামলার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ওবায়দুল কাদেরের নামও রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ড. আসিফ নজরুল লেখেন, “খুনের মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনে বাধা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার। এটা কোনভাবেই আমার আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছেন নিম্ন আদালতের বিচারকরা। তারা বিমানবন্দর পাহারা দেন না, কারো চলাচলে বাধাও দিতে পারেন না।”
ফেসবুক পোস্টে ড. নজরুল দাবি করেন, আইন মন্ত্রণালয়ের খসড়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সুযোগ রেখে ICT আইনে সংশোধনী প্রস্তাব রাখা হয়েছিল এবং সেই প্রস্তাব তিনি নিজে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করেন।
“আমার উত্থাপিত খসড়ার আমি বিরোধিতা করবো—এটা কিভাবে সম্ভব?”— উল্লেখ করে তিনি বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হয়, তার দায়-দায়িত্ব আমাদের সকল উপদেষ্টার। আমাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে মতভেদ নেই, তবে পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আইনগত দিক দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা কোনো সমস্যা নয়। আইসিটি আইন ছাড়াও সন্ত্রাস দমন আইনসহ অন্যান্য আইনের আওতায়ও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে, কিংবা আদালতের পর্যবেক্ষণ বা রায় এলে আইনানুগভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে। আমরা সেই প্রত্যাশায় আছি—ইনশাআল্লাহ।”
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকায় একাধিক বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে। এ অবস্থায় আবদুল হামিদের গোপন দেশত্যাগ এবং আইন উপদেষ্টাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আইন উপদেষ্টার এই অবস্থান অনেক বিতর্কের জবাব দিয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। তবে বিষয়টি নিয়ে সরকারিভাবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি।
একুশে সংবাদ/ চ.ট/এ.জে