‘স্মার্ট ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় স্মার্ট ডিজিটাইজেশন, স্মার্ট অবকাঠামো, স্মার্ট ব্যবসা এবং স্মার্ট সক্ষমতা এই চারটি অনুষঙ্গ অপরিহার্য। স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী ডাক সেবা প্রতিষ্ঠায় করণীয় বিষয়ে পরিচালিত সমীক্ষা প্রতিবেদনের খসড়ায় এই চারটি অনুষঙ্গের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।’
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার আগারগাঁওয়ের ডাক ভবনে সমীক্ষা প্রতিবেদনের এই খসড়া উপস্থাপন করা হয়। ডাকঘর ডিজিটাইজেসনের জন্য এটুআই এর ব্যবস্থাপনায় গৃহীত ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাব (ডিএসডিএল) এর সুপারিশ মোতাবেক একটি সমীক্ষা প্রকল্পের অধীন বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের জন্য অটোমেটেড মেইল প্রসেসিং নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে এই সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার –এর উপস্থিতিতে সমীক্ষা প্রতিবেদনের খসড়া উপস্থাপন করা হয়। ডাক সেবা প্রদান ও গ্রহণকারীসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত ও সুপারিশের ভিত্তিতে বিবেচনার জন্য চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে।
সমীক্ষা প্রতিবেদনের খসড়ায় স্মার্ট ডিজিটাইজেশনের জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনা রয়েছে।দিকনির্দেশনাসমূহ হচ্ছে সমন্বিত ডিজিটাল প্লাটফর্ম, পেপারলেস ও ক্যাশলেস ডাক ব্যবস্থার জন্য করণীয় বিষয়,স্মার্ট অবকাঠামো গঠনে স্বয়ংক্রিয় মেইল প্রসেসিং সেন্টার, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিষয়সমূহের অন্তর্ভূক্তি এবং অবকাঠামো ও ডিজিটাল সংযুক্তি। স্মার্ট ব্যবসার জন্য নতুন ব্যবসায়িক মডেল বাস্তবায়ন, জিটুজি ডাক সেবা এবং ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। স্মার্ট সক্ষমতা তৈরির জন্য মানসিকতা ও বিদ্যমান ধ্যান ধারণার পরিবর্তন, স্মার্ট প্রযুক্তি গ্রহণ এবং স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি ইত্যাদি।
খসড়া প্রতিবেদনে স্মার্ট ডাকঘর বাস্তবায়নে এই চারটি অনুষঙ্গ বাস্তবায়নে স্মার্ট বিপিও কমিশন গঠন, স্মার্ট বিপিও টাস্ক ফোর্স গঠন, আগামী তিন মাসে চারটি বিষয় বাস্তবায়নে ডিপিপি প্রস্তুত, স্মার্ট বিপিও কৌশল প্রণয়ন এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ কর্তৃক আর্থিক উৎস্য ও নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ,স্মার্ট ভিশন বাস্তবায়ন রোড ম্যাপ তৈরি এবং এ বিষয়সমূহের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ,ট্যাকিং ও প্রগ্রেস সংক্রান্ত বিষয়টি সুপারিশমালা হিসেবে তুলে ধরা হয়। স্মার্ট ডাকঘর বাস্তবায়নে তিনটি ুঅপসন সুপারিশ করা হয়।
প্রথমটি হচ্ছে সমন্বিতভাবে চারটি অনুষঙ্গ বাস্তবায়ন,দ্বিতীয় অপসন হচ্ছে অগ্রাধিকার ভিত্তিক বিষয় গুলোর বাস্তবায়ন এবং তৃতীয় অপসনটি হচ্ছে স্মার্ট জিপিও মডেল। প্রথমটি পুরো ডাক ব্যবস্থাকে একসাথে স্মার্ট ডাকঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠায় চারটি অনুষঙ্গের সব কটি এক সাথে বাস্তবায়ন। এ জন্য সময় লাগবে ৮ বছর এবং সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৩ হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। দ্বিতীয় অপসন হচ্ছে অগ্রাধিকার অনুষঙ্গ ভিত্তিক একক প্রকল্প।
এর আওতায় স্বয়ংক্রিয় মেইল প্রসেসিং সেন্টার, সমন্বিত ডিজিটাল প্রকল্প এবং অবকাঠামো ও লজিস্টিক। এটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে ৫ থেকে ৮ বছর এবং সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫শত কোটি টাকা। তৃতীয় অপসনটি হচ্ছে স্মার্ট জিপিও মডেল, মডেল স্মার্ট অফিস ও স্মার্ট সক্ষমতা ও ব্যবসা। এটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় হিসেবে সমীক্ষা প্রতিবেদনের খসড়ায় সম্ভাব্য ব্যয় দেখানো হয়েছে ৫০ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নের সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে ৫ থেকে ৭ বছর।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার স্মার্ট ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় পরিচালিত সমীক্ষার প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে তার
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট ডাকঘর অপরিহার্য। ডিজিটাল যুগের উপযোগী ডাক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের পথ নকশা ইতোমধ্যে তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। ডাক ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজ করার পাশাপাশি কর্মরত ৪৩ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীকেও ডিজিটাল দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে ডাকঘর ডিজিটাল করার কাজ আমরা শুরু করেছি। চিঠি আদান প্রদান যুগীয় ডাক ব্যবস্থা অচল হয়ে গেলেও জনগণের দোরগোড়ায় ডকুমেন্টসহ বিভিন্ন পণ্য ডেলিভারির বিশাল চাহিদা পুরণে ডাকঘরকে উপযোগী করার চলমান কর্মসূচি সফল করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেবার মনোভাব নিয়ে আরও নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী স্মার্ট ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় পরিচালিত সমীক্ষাটি অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে উল্লেখ করেন। সমীক্ষা পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: হারুনুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জিনাত আরা, এটুআই কর্মকর্তা ফরহাদ জাহিদ শেখ সাব্বির রহমান,প্রকল্প পরিচালক মো: ছালেহ আহম্মাদ এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জয়েন ভেঞ্চার অব নিউভিশন সলিউশন লিমিটেড এন্ড ট্রাই ভিশন লিমিটেডের গবেষণা কর্মকর্তা ফাহিম রহমান বক্তৃতা করেন।
একুশে সংবাদ/এসএপি
    
                        

                                            
                                                        
                            
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
												
												
												
												
												
												
												
												
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
