দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিভিউ আবেদনের আদেশ ঘোষণার দিন পিছিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) নির্ধারণ করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আদেশের জন্য এ দিন ঠিক করেন।
এর আগে গত ৩০ জুলাই আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি সম্পন্ন হয়। তখনই ৬ আগস্ট আদেশ ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছিল।
সেদিন আদালতে রিভিউ আবেদনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন ও অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। ইন্টারভেনর হিসেবে অংশ নেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
রিভিউ শুনানি শুরু হয়েছিল ২০২৫ সালের ২৭ এপ্রিল। তারও আগে, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি বিচারকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’ রিভিউ শুনানির জন্য দ্রুত আবেদন করে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর এই আবেদন পেশ করেন। একই ইস্যুতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলরাও আবেদন জমা দেন।
প্রসঙ্গত, আপিল বিভাগ ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নির্ধারণে রায় দিয়েছিল, যার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর। সেই রায়ে বলা হয়:
১. সংবিধান যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, সেহেতু রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের শুরুতেই সাংবিধানিক পদাধিকারীদের গুরুত্ব অনুসারে রাখতে হবে।
২. জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় সদস্যরা রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের ২৪ নম্বর থেকে ১৬ নম্বরে সরকারের সচিবদের সমমর্যাদায় উন্নীত হবেন। জুডিশিয়াল সার্ভিসের সর্বোচ্চ পদ জেলা জজ। অন্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে সচিবরা রয়েছেন।
৩. অতিরিক্ত জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় সদস্যদের অবস্থান হবে জেলা জজদের ঠিক পরেই, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের ১৭ নম্বরে।
রায়ে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ও আচারানুষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে; নীতিনির্ধারণী বা প্রশাসনিক কার্যক্রমে এর ব্যবহার করা যাবে না।
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সরকার একটি ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে, যা ২০০০ সালে সংশোধিত হয়। এই সংশোধিত তালিকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বিচারকদের সংগঠনের সাবেক মহাসচিব আতাউর রহমান। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দিয়ে সংশোধিত ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বাতিল করে আটটি নির্দেশনা দেয়।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে